রাজারহাট হানাদার মুক্ত দিবস আজ

প্রকাশ | ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতা
আজ ৬ ডিসেম্বর। রাজারহাট হানাদার মুক্ত দিবস। দিবসটি রাজারহাটবাসীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূণর্। এ উপলক্ষে রাজারহাট উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা বিভিন্ন কমর্সূচি পালন করবে। প্রতিবছর বিজয়ের মাসে প্রথমভাগে ঠাটমারী বধ্যভ‚মি স্মৃতিস্তম্ভের সংস্কারকাজ করা হলেও এ বছর এটি অযতœ-অবহেলায় পড়ে রয়েছে। স্মৃতিস্তম্ভের বেশ কিছু স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। তাই এটি পুনঃসংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তি, মুক্তিযোদ্ধাসহ বুদ্ধিজীবীরা। এই দিনে বাংলার দামাল ছেলেদের প্রতিরোধের মুখে পাকিস্তানি হানাদাররা রাজারহাট ছেড়ে পালিয়ে যায়। হানাদারমুক্ত হয় এই অঞ্চল। ১৯৭১ সালের ২৮ মাচর্ কুড়িগ্রাম সংগ্রাম কমিটির নেত্বত্বে স্থানীয় গওহর পাকর্ মাঠে এক বিশাল জনসমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখান থেকে আহম্মদ আলী বকসী, অধ্যাপক হায়দার আলী, তাছাদ্দুক হোসেন ও মহির উদ্দিন আহম্মদকে নিয়ে স্থানীয় কমান্ড গঠন করা হয়। তাদের নিদেের্শ বিভিন্ন থানা থেকে গোলাবারুদ, অস্ত্র সংগ্রহ করে তৎকালীন মহকুমা আওয়ামী লীগের সভাপতি আহম্মদ হোসেন সরকারের গ্রামের বাড়িতে অস্ত্র মজুদ করা হয়। ২৯ মাচর্ সকালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা জহির উদ্দিন আহমেদ, আছমত উল্লাহ্ ব্যাপারি ও আলী মনসুর সেখানে যান। ক্যাপ্টেন নওয়াজেশ উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে কুড়িগ্রাম আওয়ামী লীগকে বিষয়টি অবগত করেন। ৩০ মাচর্ ক্যাপ্টেন নওয়াজেশের নিদেের্শ ওই উইংয়ের অধিনায়ক সুবেদার নূর মোহাম্মদ, সুবেদার আ. মান্নান, সুবেদার আরব আলী ও বোরহান উদ্দিন তাদের সহযোদ্ধা ইপিআরদের নিয়ে রাজারহাট হয়ে কুড়িগ্রামে যান। ১ এপ্রিল পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণ ঠেকাতে তিস্তা ব্রিজের অপর পাশে মুক্তিযোদ্ধারা একটি শক্তিশালী ঘঁাটি তৈরি করেন। এ সময় ইপিআর সদস্যরা রাজারহাট পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে ক্যাম্প তৈরি করে। এরপর পাকবাহিনী দুইবার রাজারহাট আক্রমণ করে। অবশেষে মধ্য এপ্রিলে হানাদার বাহিনী রাজারহাট দখল করে নেয়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী রাজারহাট দখল করে তাদের দোসরদের সহযোগিতায় সাধারণ মানুষের ঘর-বাড়িতে আগুন, লুটপাট, ধষর্ণ ও গণহত্যা চালায়। অবশেষে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের দীঘর্পথ পাড়ি দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিগ্রেডিয়ার যোশীর নেতৃত্বাধীন ভারতীয় সেনাবাহিনীর ষষ্ঠ মাউন্টেড ডিভিশনের সহযোগিতায় পাকবাহিনীর ওপর পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে ৬ ডিসেম্বর রাজারহাট মুক্ত করেন।