বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বদলগাছীতে ভেজাল কীটনাশকে বাজার সয়লাব, বিপাকে কৃষক

ম বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি
  ১৮ মে ২০২২, ০০:০০

নওগাঁর বদলগাছীতে ভেজাল কীটনাশকে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। এতে বেকায়দায় পড়েছেন স্থানীয় কৃষক। না বুঝে এসব ভেজাল কীটনাশক ব্যবহার করে উপকারের পরিবর্তে উল্টো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। ধান, সবজিসহ বিভিন্ন ক্ষেতে পোকা দমনে কীটনাশক ব্যবহার না করলে ফসল ফলানো সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু দোকান থেকে কেনা কীটনাশক দিয়ে কোনো কাজ করছে না। একদিকে যেমন ফসলের ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছেন উপজেলার কৃষক।

জানা গেছে, ইনতেফা কোম্পানির 'বাতির' নামক কীটনাশক কোম্পানির নির্ধারিত ডিলারদের মাধ্যমে বাজারে বিক্রি করে থাকে। কোম্পানির নির্ধারিত দোকানগুলোয় এ কীটনাশক না থাকলেও একই রকম লেবেল লাগানো বোতল বা প্যাকেট বাইরের সর্বত্র অনুমোদিত দোকানগুলোয় পাওয়া যাচ্ছে। কৃষকরা সেসব চরা দামে কিনে পোকা দমনের জন্য স্প্রে করছেন ঠিকই, কিন্তু তা দিয়ে কিছুতেই পোকা দমন করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে কোম্পানির বিরুদ্ধে তাদের বিভিন্ন অভিযোগ উঠছে। বোতল বা প্যাকেটের গায়ে মনোগ্রাম বা লেবেল দেখে বোঝার উপায় নেই এটা নকল নাকি আসল কীটনাশক। কৃষকরা না বুঝে নকল কীটনাশক কিনে প্রতারিত হচ্ছেন। নকল কীটনাশক বিক্রি বন্ধে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন উপজেলার কৃষকরা। তারা মনে করেন- উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রশাসনের অভিযান পরিচালনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। না হলে তারা প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হয়ে দিন দিন ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা যায়, যত্রতত্র লাইসেন্সবিহীন গড়ে উঠেছে কীটনাশকের দোকান। এমনকি মুদির দোকানেও বিক্রি হচ্ছে কীটনাশক।

উপজেলার কোলা ইউনিয়নের কেশাইল গ্রামের দেলোয়ার হোসেন, পাড়োরা গ্রামের আব্দুল বারীক, চাংলা গ্রামের পলাশ হোসেন বলেন, দুই বছর আগে যে কীটনাশকের দাম ছিল দুইশ' টাকা সেটি এখন ৩৫০ টাকা। কিন্তু আগের মতো কাজ হচ্ছে না।

বদলগাছী বাজার বণিক সমিতির সভাপতি গোলাম কিবরিয়া জানান, তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে কীটনাশকের ব্যবস্যা করছেন। নতুন কিছু ব্যবসায়ী হয়েছে। তাদের দোকান থেকে কেনা কীটনাশক বিভিন্ন ফসলে প্রয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক। ইনতেফা কোম্পানির ডিলার মিন্টু সাহা বলেন, তার কাছেও কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করেছেন।

উপজেলা উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু রায়হান হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে ভোক্তা অধিকার দপ্তরের সঙ্গে কথা হয়েছে। অচিরেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মিনেট কীটনাশক কোম্পানির মার্কেটিং অফিসার খাজা মদ্দীন বলেন, 'আমাদের কোম্পানির এ ধরনের কোনো রিপোর্ট নেই। আমাকে কেউ ফাঁসানোর চেষ্টা করছে নাকি ভাবার বিষয়।'

ইনতেফা কোম্পানির মার্কেটিং অফিসার ছারোয়ার আলম বলেন, 'আপনারা আমাদের তথ্য দেন কোন দোকান থেকে কৃষক কীটনাশক কিনেছে, আমরা খোঁজ নিয়ে দেখব।'

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাসান আলী বলেন, অনেক সময় ওষুধের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে এ সমস্যা হয়। ইউএনও আলপনা ইয়ামিন বলেন, কৃষি অফিসারকে বলে প্রতিটি কীটনাশক দোকান চেক করে দেখবেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে