আইপিএম পদ্ধতিতে বাদাম চাষে ঈর্ষণীয় সফলতা

প্রকাশ | ২৪ মে ২০২২, ০০:০০

ম পটুয়াখালী প্রতিনিধি
সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা বা আইপিএম পদ্ধতিতে পটুয়াখালীতে চীনা বাদাম চাষ করে এবার বাম্পার ফলন পাওয়া গেছে। এই পদ্ধতিতে চাষাবাদে কীটনাশক ব্যবহার না করে পোকা মাকড়ের আক্রমণ মুক্তভাবে ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হচ্ছে। ফলে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন এবং কম ব্যয়ে অধিক ফসল ফলানো সম্ভব হয়েছে। আগামীতে এই প্রযুক্তি কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে কৃষি বিভাগসহ বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। পটুয়াখালীসহ দক্ষিণ উপকূলের বালিযুক্ত মাটিতে বাদামের ভালো ফলন হচ্ছে। তবে বাদাম চাষে পোকা মাকড়ের আক্রমণ হওয়ায় কৃষক বিভিন্ন সময় ক্ষতির মুখে পড়েন। এমন পরিস্থিতিতে কৃষকদের চাষাবাদে আধুনিক পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দিতে পটুয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায় চীনা বাদামের প্রদর্শনী পস্নট স্থাপন করা হয়েছে। ইউএসআইডি মিশনের অর্থায়নে ফিট দ্যা ফিউচার বাংলাদেশ ইন্ট্রিগেডেট পেস্ট ম্যানেজমেন্ট একটিভিটি নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষককের বাদাম খেতে আঠালো ফাঁদ, ফেরোমন ফাঁদ, পার্চিং এসওপি এবং বায়োপেস্টিসাইড ব্যবহার করা হচ্ছে। ফিট দ্য ফিউচার বাংলাদেশ ইন্ট্রিগেডেট পেস্ট ম্যানেজমেন্ট একটিভিটি'র ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডক্টর শাহাদাত হোসেন জানান, তারা এই প্রকল্পের প্রকল্পের মাধ্যমে জেলায় পাঁচটি প্রদর্শনী দিয়েছেন। এ থেকে কৃষকদের দেখানোর চেষ্টা করেছেন চীনা বাদামে যেসব প্রধান পোকামাকড় আক্রমণ করে তা প্রতিরোধে কোনো কেমিক্যাল পেস্টিসাইড ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। ইতোমধ্যে তাদের ফলনের পার্থক্যও দেখানো হয়েছে। যেহেতু পটুয়াখালীতে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে চীনা বাদাম চাষ হয়, সেক্ষেত্রে কৃষকরা যাতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করেন সে বিষয়ে তাদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। আধুনিক এবং নিরাপদ এসব প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে বিগত সময়ের থেকে কিংবা যেসব জমিতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়নি সেসব জমির থেকেও এবার ভালো ফলন পাওয়া গেছে। পাশপাশি ভালো দাম পাওয়ায় খুশি স্থানীয় কৃষক। পটুয়াখালী সদর উপজেলার মরিচবুনিয়া এলাকার কৃষক সোবাহান গাজী জানান, বিগত বছরের থেকে এবার ফলন অনেক বেশি ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা বাদাম তোলা শুরু করেছেন। এবার বাদামের দামও ভালো কাঁচা অবস্থায় ২৪শ' টাকা মণ এবং শুকনো অবস্থায় ৪ হাজার টাকা মণ হিসেবে বিক্রি করতে পারছেন। পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক একেএম মহিউদ্দিন বলেন, 'অনুকূল আবহাওয়া এবং ভালো ফলন পাওয়ায় বিগত বছরের থেকে এবার জেলায় বেশি পরিমাণ জমিতে চীনা বাদামের আবাদ হয়েছে। গত বছর ৪৪০০ হেক্টর জমিতে চীনা বাদাম চাষ হলেও এবার হয়েছে ৫ হাজার ৭৮৩ হেক্টর জমিতে। তবে আইপিএম পদ্ধতির এই চাষাবাদ কৃষকের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারলে কৃষকরা যেমন অধিক ফসল ঘরে তুলতে পারবেন, তেমনি বাদাম চাষে তাদের অগ্রহ বাড়বে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট পটুয়াখালী সরেজমিন গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডক্টর শহিদুল ইসলাম বলেন, 'চীনা বাদাম দক্ষিণ অঞ্চলের অন্যতম একটি তেল ফসল। কৃষকরা যদি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বারি চীনা বাদাম-৮ এবং বারি চীনা বাদাম-৯ চাষাবাদ করেন তবে অনেক বেশি ফলন পাবেন।