মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কাদায় আটকা হাতিটি মারা গেল চিকিৎসাধীন অবস্থায়

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
  ২৯ মে ২০২২, ০০:০০
কাদায় আটকে অসুস্থ হয়ে পড়া বুনো হাতিটি চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোরে কক্সবাজারের চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে মারা যায় -যাযাদি

কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজরার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোরে মারা গেছে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার কোদালায় কাদায় আটকে পড়ে অসুস্থ হয়ে পড়া সেই মাদী হাতিটি। এই ঘটনায় সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ চকরিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি রুজু করেছে।

এর আগে অসুস্থ হয়ে পড়া হাতিটির সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে গত ২২ মে। এর পরদিন থেকে অসুস্থ হাতিটির চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম শুরু হয়।

হাতিটির চিকিৎসায় গঠিত পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডে নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন ও সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ড. বিবেক চন্দ্র সূত্রধর। বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক এবং বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী কর্তৃক গঠিত পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের অন্যরা হলেন- সদস্য যথাক্রমে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ভজন চন্দ্র দাস, ঢাকা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (অব.) ডা. মো. ফরহাদ হোসেন, চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুপন নন্দী। সদস্যসচিব ছিলেন পার্কের বন্যপ্রাণী চিকিৎসক হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকার নাইন।

মেডিকেল বোর্ডের সদস্যসচিব ও পার্কের বন্যপ্রাণী চিকিৎসক হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকার নাইন বলেন, 'পার্কে আনার পর থেকেই হাতিটি অনেকটাই চলৎশক্তিহীন অবস্থায় ছিল। বয়স অনুপাতে হাতিটি যে পরিমাণ খাবার গ্রহণের কথা ছিল, তার সামান্যটুকুই গ্রহণ করত। অনেক সময় মুখ থেকেও খাবার ফেলে দিত। এছাড়া অসুস্থ হওয়ার পর থেকে হাতিটির পায়খানা-প্রস্রাব বন্ধ ছিল।'

পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ১৩ মে বিকেলে হাতিটিকে ট্রাকযোগে পাঠানো হয় চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে। এদিন থেকে হাতিটিকে পার্কের হাতির গোদা নামক স্থানে রেখে নিয়মিত নজরদারিতে রাখা হয়েছিল। পার্কে আনার পরপরই হাতিটি প্রথমদিকে বুনো আচরণ শুরু করলেও পরবর্তীতে একেবারে শান্ত এবং নিস্তেজ অবস্থায় ছিল।

পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম জানান- গত ৩০ এপ্রিল হাতিটিকে কাদায় আটকে থাকাবস্থায় উদ্ধার করে বনবিভাগ এবং সংশ্লিষ্টরা। এরপর হাতিটিকে বনে ফেরত পাঠানো হয়। কিন্তু হাতিটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত ছিল। কাদায় আটকেপড়া অবস্থায় মুখ দিয়ে শরীরের ভেতর কাদামাটি ঢুকে পড়ে। চিকিৎসার জন্য কোদালা বনবিটের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয় হাতিটিকে। সেখানে পার্কের ভেটেরিনারি সার্জনের নেতৃত্বে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু তাতেও আশানুরূপ ফলাফল না আসায় প্রধান বনসংরক্ষকের নির্দেশে গত ১৩ মে হাতিটিকে সাফারি পার্কে পাঠানো হয়। এখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোরে মারা যায় হাতিটি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে