হাটে পর্যাপ্ত গরু থাকলেও ক্রেতা সংকটে ভূঞাপুরের ব্যবসায়ীরা

ভোলাহাটে কোরবানিতে চাহিদার অতিরিক্ত গবাদি পশু উৎপাদন

প্রকাশ | ০৫ জুলাই ২০২২, ০০:০০

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে জমজমাট গোহালবাড়ী পশুরহাট -যাযাদি
কোরবানির ঈদ সামনে রেখে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের হাটগুলোতে পর্যাপ্ত গরু-ছাগল উঠলেও এখন পর্যন্ত বিক্রি জমে ওঠেনি। বাজারে একদিকে ক্রেতার ভিড় নেই। অন্যদিকে, যারা আসছেন তারাও পছন্দের গরু-ছাগলের দাম পরখ করে চলে যাচ্ছেন। এর মধ্যে আবার ক্রেতারা কোরবানির পশুর অতি মূল্য হাঁকানোর অভিযোগও করেছেন। এদিকে, হাটগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পশু থাকলেও রয়েছে ক্রেতার সংকট। ফলে বেপারীরা এখনো বাজার পরিস্থিতি কোনদিকে যাচ্ছে তা বুঝে উঠতে পারছেন না। অধিকাংশ বেপারীই বাজারে নিয়ে আসা পশু বিক্রি করতে পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। হাটে নিয়ে আসা ছোট-বড় গরুর খামারিরাও লোকসানের কথা জানিয়েছেন। সরেজমিনে রোববার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম উপজেলার গোবিন্দাসী গরুর হাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। সিরাজগঞ্জ থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী রহিম মন্ডল বেপারী জানান, প্রতিটা এক লাখ ২০ হাজার টাকার ওপরে ৯টি গরু হাটে তুলেছেন। তার মধ্যে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাত্র একটি গরু বিক্রি করতে পেরেছেন। বাকিগুলো ক্রেতারা দেখেই চলে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পাথাইলকান্দি থেকে আসা স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী কাদের মোলস্না জানান, গরুর দামদর করে চলে যাচ্ছেন ক্রেতারা। ৮৫ হাজার টাকার গরু দাম করছেন ৭০ হাজার টাকা। এতে করে লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন। স্থানীয় ক্রেতা করিম হোসেন, মহর আলী, মজিবরসহ অনেকেই বলেন, গতবারের তুলনায় হাটে গরু প্রচুর পরিমাণে উঠেছে। কিন্তু দাম অনেক বেশি চাচ্ছে। ফলে পশু কিনতে অনেকটা বেগ পোহাতে হচ্ছে। ছাগলের বেপারী তারা মিয়া জানান, গরুর কেনাবেচা নেই বললেই চলে। আর ছাগল দুই-চারটা বিক্রি হচ্ছে। কোরবানির চাপ এখনো পড়েনি হাটে। গোবিন্দাসী হাটের ইজারাদার জাহিদুল ইসলাম খোকা জানিয়েছেন, হাটে পর্যাপ্ত কোরবানির পশু উঠেছে। তবে, তেমন বেচাকেনা হচ্ছে না। হাটের আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে জানতে চাইলে ভূঞাপুর থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, হাটের নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য বিশেষ টিম সার্বক্ষণিক নজর রাখছে। এদিকে ভোলাহাট (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, আসছে ঈদুল আজহা ঘিরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে চাহিদাতিরিক্ত গবাদি পশু উৎপাদন হয়েছে। ঈদুল আজহা সামনে রেখে ১ হাজার ৩০টি খামারি ২ হাজার ৪৫টি ষাঁড় প্রস্তুত করেছেন। এছাড়া ৪১৩টি বলদ, ২ হাজার ৬৮২টি গাভী, ৪টি মহিষ, ছাগল ৬ হাজার ৯৫৮টি, ভেড়া ৯৯৭টি সর্বমোট ১৩ হাজার ৯৯টি গবাদি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে উপজেলায় মোট উৎপাদনের গবাদি পশুর চাহিদা রয়েছে ৮ হাজার৫৫০টি এবং অতিরিক্ত থাকবে ৪ হাজার ৫৪৯টি। এদিকে গবাদি পশুর উৎপাদন বেশি হলেও বাজারে গিয়ে উচ্চ দামের কারণে অনেকেই খালি হাতে বাড়ি ফিরছেন। বিক্রেতারা বলছেন, যথাযথ দাম না পাওয়ায় বাড়ি নিয়ে যেতে হচ্ছে তাদের পশু। তবে উপজেলার একমাত্র গোহালবাড়ীর হাটে রোববার ও বৃহস্পতিবার (সপ্তাহে দুই দিন) গবাদি পশু ক্রয়-বিক্রয় হয়। এ হাটের ইজারাদার কাউসার আলী বলছেন, ঈদ যত এগিয়ে আসছে গবাদি পশু তত বেশি কেনাবেচা বাড়ছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুলস্নাহ জানান, ঈদুল আজহার জন্য ভোলাহাটে চাহিদাতিরিক্ত গবাদি পশু উৎপাদন হয়েছে। সাড়ে চার হাজার গবাদি পশু চাহিদার তুলনায় বেশি উৎপাদন হয়েছে। স্থানীয়ভাবে গবাদি পশু সংকট হবে না বলে নিশ্চিত করেন। উলেস্নখ্য, উপজেলার একমাত্র গবাদি পশু কেনাবেচা গোহালবাড়ী হাটে সরকার নির্ধারিত খাজনার চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা। খাজনা রশিদে টাকা সংখ্যা বসাচ্ছে না বলে ক্রেতারা অভিযোগ করেন।