ধুনটে পাটের ফলন ভালো হলেও ব্যয় নিয়ে দুশ্চিন্তা

প্রকাশ | ০৮ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি
বর্ষাকালেও তেমন বৃষ্টির দেখা নেই। মাঝে মধ্যে কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিপাত হলেও প্রখর রোদে বৃষ্টির পানি আবারও শুকিয়ে যায়। বর্ষার ভরা মৌসুমেও নদী-নালা, খাল-বিলে এখন হাঁটু পানি। তাই পানি স্বল্পতায় পাট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার পাটচাষিরা। অনেকে বাড়ির উঠানে বা জমিতেই গর্ত করে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি জমিয়ে সেখানে পাট গাছ জাগ দিয়ে রাখছেন। তবে স্বল্প পানিতে পাট গাছ জাগ দেওয়ায় পাটের আঁশের গুণগত মান কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ধুনটের ১০ ইউনিয়নের ২ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। কিন্তু পাট গাছ পরিপক্ব হলেও নদী-নালা, খাল-বিলে পর্যপ্ত পানি না থাকায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। রোববার চৌকিবাড়ী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আফসার আলী নামে এক কৃষক তার ২ বিঘা জমির পাট গাছ কেটে নিয়ে তা জমির এক পাশে গর্ত করে সামান্য বৃষ্টির পানি জমিয়ে সেখানে জাগ দিচ্ছেন। কৃষক আফসার আলী জানান, এখন বর্ষার ভরা মৌসুম হলেও বৃষ্টির কোনো দেখা নেই। তাই জমির পাশে গর্ত করে সেচ দিয়ে ও জমানো বৃষ্টির পানিতে পাট গাছ জাগ দিচ্ছেন। তবে অল্প পানিতে পাট জাগ দেওয়ায় আঁশের গুণগত মানও কমে যাবে। এছাড়া এ বছর শ্রমিকের মজুরিও অনেক বেশি। তাই ফলন ভালো হলেও তেমন লাভের মুখ দেখবে না কৃষক। একই গ্রামের পাট চাষি আলাউদ্দিন জানান, পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় খাল-বিলে পানি নেই। তাই পাট কাটার পর কীভাবে এখন জাগ দিব। তাই নিয়েই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। ধুনট উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাজেদুল করিম জানান, নদীবিধৌত এলাকা হওয়ায় এই উপজেলার ১০টি ইউনিয়নেই পাট চাষের উপযোগী। তার মধ্যে নিমগাছী, মথুরাপুর, গোপালনগর ও চৌকিবাড়ী ইউনিয়নে সব চেয়ে বেশি পাট চাষ হয়ে থাকে। নিমগাছী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোনিতা নাসরিন বলেন, নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর-ডোবা বেশি থাকায় এই ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি পাট চাষ হয়ে থাকে। কিন্তু এ বছর অনাবৃষ্টির কারণে এসব জলাশয়ে পর্যাপ্ত পানি নেই। তাই পাটচাষিরা অনেকটাই বিপাকে পড়েছেন। ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় ২ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে দেশি, তোষা ও মেসতা জাতের পাট চাষ হয়েছে। ফলনও অনেক ভালো হয়েছে। তবে অনেক এলাকায় পানির জন্য কৃষকরা কিছুটা দুশ্চিন্তায় থাকলেও তাদের রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট জাগ দেওয়ার পারামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এতে পাটের গুণগত মানও অনেক ভালো হয়।