নদী পারাপারে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা

প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

ম বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে জালিয়াখালী জলকদর খালের ওপর ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো -যাযাদি
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউনিয়নের জালিয়াখালী ও শীলকূপ ইউনিয়নে মনকিচরের মাঝখানে বয়ে গেছে জালিয়াখালী জলকদর খাল। এ জলকদর খালটি এক সময় বাণিজ্যিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। দীর্ঘ কয়েক বছর আগে দুই ইউনিয়নের মানুষের যাতায়াতের জন্য স্থানীয়দের উদ্যোগে নদীর উপর তৈরি হয় বাঁশের সাঁকো। এরপর দুই ইউনিয়নের অর্ধ লাখ মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হয়ে ওঠে ঝুঁকিপূর্ণ এ বাঁশের সাঁকো। এদিকে জোয়ার-ভাটার পানির তোড় এবং স্থানীয় মাছ ধরার ট্রলার যাতায়াত ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সাঁকোটি বেশ কয়েকবার ভেঙে যায়। এলাকাবাসী কিছুদিন পর পর স্থানীয়দের থেকে সংগ্রহ করা টাকায় সাঁকো সংস্কার করলেও পুনরায় একই কারণে ভেঙে যায়। এদিকে মনকিচর ইসলামিয়া এমদাদুল উলুম মাদ্রাসা, আল হুমায়রা বালিকা মাদ্রাসা, বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়, মনকিচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হাজারো ছাত্রছাত্রীর যাতায়াতের একমাত্র ভরসা ঝুঁকিপূর্ণ এ সাঁকো। এ ছাড়াও ২০ থেকে ২৫ হাজার স্থানীয় মানুষের নিয়মিত চলাফেরার একমাত্র পথ এটি। এ সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন দুই এলাকার জনগণসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা পড়ুয়া, মাছ ব্যবসায়ীসহ তিন থেকে চার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। বর্ষায় এ নদীতে থাকে প্রচন্ড স্রোত। তখন উজানের পাহাড়ি ঢলের স্রোতে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায় সাঁকোটি। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, এ সাঁকো দিয়ে নদী পারাপার করছে একদল মাদ্রাসা পড়ুয়া শিশু। শীলকূপ অংশ থেকে সরল অংশে যাচ্ছে তারা। এদিকে তারা সাঁকোতে উঠতেই দোলনার মতো দোল খাচ্ছে সাঁকোটি। একটু এদিক-সেদিক হলেই যেন পড়ে যাবে নদীতে। এ সময় মৃতু্যঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে বিভিন্ন স্কুল-মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রী। এ ছাড়াও ওই এলাকা শুঁটকির অভয়ারণ্য হওয়ায় মাথায় শুঁটকি বোঝাই করে পারাপার হচ্ছেন শতাধিক জেলে ও মাছ ব্যবসায়ী। এ সাঁকো দিয়ে ৫ গ্রামের বাসিন্দা প্রতিদিন মনকিচর ও সরল এলাকায় কৃষি জমিতে চাষাবাদ করতে যায়। কৃষিপণ্য আনা-নেওয়ায়ও পোহাতে হয় দুর্ভোগ। সব মিলিয়ে প্রতিদিন নারী ও শিশুসহ তিন থেকে চার হাজার মানুষের চলাচল এ ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোয়। স্থানীয় বাসিন্দা দিদারুল হক বলেন, এ এলাকার শতাধিক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। এখানে সেতু না হওয়ায় চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয় তাদের। বৃষ্টির দিনে বাঁশের সাঁকো ভিজে পিচ্ছিল হয়ে পড়ে। এতে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ভয়ে এলাকার ছাত্রছাত্রী নিয়মিত স্কুল-মাদ্রাসায় যেতে পারে না। এমনকি ছাত্রছাত্রীরা সাঁকো পারাপারের ভয়ে অন্য এলাকার স্কুলে ভর্তি হতে বাধ্য হচ্ছে। শীলকূপ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কায়েস সরওয়ার সুমন বলেন, এ সাঁকোর কারণে দুই এলাকার মানুষ অনেক কষ্ট পাচ্ছে। এ বিষয়ে সরল ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তাছাড়া এমপির কাছেও আবেদন করে শিগগিরই একটি স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন।