তেঁতুলিয়ায় মাদকের নীল দংশনে তরুণরা

সন্তানদের বাঁচাতে আকুতি অভিভাবকদের

প্রকাশ | ১৮ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

ম তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
মাদকের ভয়ংকর স্পট হয়ে উঠেছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার ভজনপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রাম। মাদকের নেশায় বুঁদ এখানকার তরুণ-সমাজ। এতে করে গ্রামের পরিবারগুলোতে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। কীভাবে মাদকের ভয়াল নেশা সন্তানদের দূরে রাখবেন, এমনটি দুশ্চিন্তায় পড়েছে বহু পরিবার। উত্তরের সীমান্ত জেলা পঞ্চগড়ের ত্রি-সীমান্ত ঘেষা তেঁতুলিয়া উপজেলা। তিনদিক দিয়ে সীমান্ত থাকায় মাদকের নিরাপদ রুট এসব সীমান্তপথগুলো। বিভিন্ন সীমান্ত রুট ব্যবহার করে মাদককারবারীরা আনছেন সর্বনাশা মাদক। অন্যদিকে এ গ্রামের পাশেই বাজার। বাজারটিতে রয়েছে একটি ফিলিং স্টেশন ও ট্রাক টার্মিনাল। টার্মিনালে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক গ্যারেজ থাকায় ট্রাকের চালক ও হেল্পারদের চাহিদার কারণেই গ্রামটিতে গড়ে উঠেছে মাদক ও জুয়ার আখড়া। স্থানীয়রা জানান, মাদকে ভরে গেছে গ্রামটি। মাদক, জুয়া, দেহব্যবসা চলছে। সন্ধ্যা নামলেই চলে আনাগোনা। বসে জুয়ার আসর। আড়ালে মাদকসেবন আর দেহ ব্যবসা। মাদক ব্যবসায়ী, মাদক সেবনকারী, জুয়া কারবারিদের বিনোদনের স্পটও গ্রামটি। বিভিন্ন জায়গা থেকে অপরিচিত লোকজন এসে ঢুকে পড়ে একেক ঘরে। শুরু হয় রাতভর মাদক আর জুয়ার কালো অধ্যায়। মাদকের কারণে আসক্ত হয়ে পড়ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও। অনেক শিক্ষার্থীই নিয়মিত স্কুল-কলেজ যাচ্ছে না। প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। গ্রামের প্রায় ঘরে ঘরে মিলছে নেশাগ্রস্ত সন্তান। এসব নিয়ে চরম অসহায় অবস্থায় পড়েছে পরিবারগুলো। ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের ৬৫ বছর বয়সি বৃদ্ধ রমজান আলী জানান, তার ২০ বছর বয়সি ছোট ছেলে আবুল কালাম মাদকের নেশায় মানসিক রোগীর মতো হয়ে পড়েছে। মাদক সেবনে টাকা না পেলে মারধর করে। এলাকার মানুষজনের জিনিসপত্র চুরি করে। এই বৃদ্ধ বয়েসে গ্রামের মানুষের সামনে লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছেন না। মাদকাসক্ত ছেলেকে নিয়ে একই সমস্যা পড়েছেন একই গ্রামের নুর ইসলাম জানান, তার ছেলেও মাদকাসক্তদের সঙ্গে মিশে নেশায় পড়েছে। মাদকের টাকা না পেলে ছেলে পকেট কিংবা আলমারি থেকে টাকা চুরি করে মাদক সেবন করে। সন্তানের এমন কার্যকলাপের কারণে এলাকায় তিনি মুখ দেখাতে পারছেন না। এমন পরিবার এ গ্রামের আরও অনেক। ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন বাঙ্গালী জানান, কয়েকজন মাদকসেবী ও বিক্রেতার কারণে দিন দিন গ্রামে অসামাজিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেশ কয়েকজনকে হাতেনাতে ধরে বিচার করলেও কোনো লাভ হচ্ছে না। তবে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হয়ে নিজ জায়গা থেকে চেষ্টা করছেন গ্রামটির সমস্যাগুলো সমাধান করার। এ প্রসঙ্গে তেঁতুলিয়া মডেল থানার ওসি আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছেন, তদন্ত চলছে।