বাঁশখালীতে অবাধে বিক্রি হচ্ছে ক্ষতিকর রং মেশানো মাছ

প্রকাশ | ১৯ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
বাঁশখালী উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি হচ্ছে ক্ষতিকর রং মেশানো সামুদ্রিক পচা মাছ। মূলত সামুদ্রিক পোপা, লইট্যা ও চিংড়ি মাছসহ নানা জাতের মাছে ক্ষতিকর রং মিশিয়ে উজ্জ্বল করে তাজা বলে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। ঘাট বা ট্রলার থেকে মাছ কিনেই রঙের খেলায় মেতে উঠেন এসব অসাধু ব্যবসায়ী। এতেই মাছ হয়ে যায় লাল আর তাজা। ক্রেতারা প্রায় পচে যাওয়া এসব মাছ দেখে মনে করছেন টাটকা। বাঁশখালীর বিভিন্ন বাজারে রং দিয়ে সামুদ্রিক মাছ তাজা করার এমন চিত্র প্রায়ই দেখা যায়। সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি বিভিন্ন কার্প জাতীয় মাছের ফুলকা লাল দেখানোর জন্যও ব্যবহার করা হয় এসব ক্ষতিকর রং। আর এসব ক্ষতিকর রং দিলে তাতে মাছ আকর্ষণীয় আর তাজা ও পচন রোধ হয় বলে দাবি ব্যবহারকারীদের। সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁশখালীর প্রধান মাছ বাজার হলো, টাইম বাজার, গুনাগরি মাছ বাজার, চানপুর বাজার, নাপোড়া বাজার, জলদি মাছ বাজার ও চাম্বল মাছ বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে রং মেশানো সামুদ্রিক মাছ। মূলত লইট্যা মাছেই এসব রং বেশি ব্যবহার করা হয়েছে। বাজারে ১০ থেকে ১২ জন ব্যবসায়ী এসব রং দেওয়া মাছ বিক্রি করছেন। তবে অনেক ক্রেতা এসব রঙের কারবার বুঝতে পেরে এড়িয়ে যাচ্ছেন। আবার অনেক ক্রেতা না বুঝে ক্রয় করছেন। রং দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মাছ বিক্রেতা আব্দুল মতলব জানান, রং দিলে মাছ একটু ভালো ও তাজা দেখায়। এতে মাছের উজ্জ্বলতা দেখে ক্রেতারা মাছ বেশি কেনেন। অল্প পরিমাণে রং দেন। এতে স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি হয় বলে মনে হয় না তার। ক্রেতারা জানান, শুধু মাছে নয়, সবজি এবং ফলেও অনেক সময় রং দেওয়া হয়। নজরদারি না থাকার কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা এই সুযোগ পায় বলে দাবি তাদের। এ বিষয়ে বাঁশখালী সহকারী কমিশনার (ভূমি) খন্দকার মাহমুদুল হাসান জানান, মাছে রং দেওয়ার বিষয়টি এক ধরনের অপরাধ। এসব অপরাধ ও অপকর্ম বন্ধ করতে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালিয়েছি। বেশ কিছু মাছ ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের মেডিকেল অফিসার ডক্টর দিদারুল হক সাকিব জানান, কৃত্রিম রং মেশানো যে কোনো খাবারই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। রং মেশানো মাছ মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে পাকস্থলী, লিভার, কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। মাছসহ যেসব খাদ্যে রং মিশ্রণের সুযোগ রয়েছে, সেসব পণ্য ক্রয়ে ভোক্তাদের সতর্ক হওয়া উচিত বলে জানান তিনি।