নীলফামারীতে গ্রামীণ অর্থনীতি উন্নয়নে কৃষ্ণচূড়া হস্ত কুটিরশিল্প

প্রকাশ | ১৯ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

ম স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী
নীলফামারীর গ্রামীণে হস্ত কুটিরশিল্পের পণ্য তৈরি করে অর্থনৈতিকভাবে মানুষের উন্নয়নে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। পরিবার-পরিজন ও সংসার নিয়ে এখানকার গ্রামীণ নারীদের একসময় অলস দিন কাটত। স্বামীর একার আয় দিয়ে সংসার চালানো ছিল খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এই প্রতিকূলতা সামনে রেখে সদরের লক্ষ্ণীচাপসহ কয়েকটি ইউনিয়নে শত শত পরিবারের নারীকে স্বপ্ন চুড়া হস্ত কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠান নিজ উদ্যোগে ২০২০ সালে ডিসেম্বরে এক মাসের ট্রেনিং দিয়েছিল। আর সেই নারীরা আজ তার সুফল পেতে শুরু করেছে। সরেজমিনে জানা যায়, বাড়ির কাজ সেরে নারীরা অবসর সময়ে বাড়িতে বসেই কলার হোগলা ও পাট দিয়ে নিপুণ হাতে তৈরি করছেন মাদুর, আনিশা মাদুর, গোলাকার মাদুর, দেওয়াল মাদুরসহ বিভিন্ন রকমের কুড়ি ধরনের পণ্য। এসব কাঁচামাল আর্টিসান ও বিডিকেশান কোম্পানি এবং মাঝে মধ্যে ফেনী, ভোলা, বরিশাল, কুমিলস্না থেকে আমদানি করে কারিগরদের সরবরাহ করেন উদ্যোক্তারা। তৈরি পণ্য বাবদ প্রতি মাসে কারিগররা পেয়ে থাকেন ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা। এ টাকায় তাদের সংসারে ফিরেছে সচ্ছলতা, হয়েছেন স্বাবলম্বী, মুখে ফুটেছে হাসি। কথা হলে পলাশবাড়ী ইউনিয়নের তরনীবাড়ি গ্রামের রাম প্রসাদের স্ত্রী কারিগর কনিকা রানী, নারায়ন চন্দ্রের স্ত্রী ফুলোবালা, রতন রায়ের স্ত্রী কনিকা রানী বলেন, 'আমরা প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজ পরিবারের কাজ শেষ করার পর অবসর সময়ে মাদুর, ফুলদানিসহ নানা ধরনের জিনিস বানাই। এ থেকে প্রতি মাসে ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা আয় করি। সংসারের কাজে খরচ করার পর হাতে টাকা জমাও থাকে। আগের চেয়ে বর্তমানে দিন অনেক ভালো যাচ্ছে।' এখানকার এসব পণ্য মানসম্মত ও পরিবেশ সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় বিদেশে প্রচুর চাহিদা। জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, ইতালি, আমেরিকা, হংকংসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়। উদ্যোক্তা ও পরিকল্পনাকারী শঙ্কর চন্দ্র রায় জানান, কারিগরদের কাছে পণ্যের কাঁচামাল সরবরাহ করেন। তৈরি পণ্য সঠিক দামে কিনে বিদেশি বায়ারের কাছে বিক্রি করে থাকেন। তিনি আরও বলেন, তারা কয়েক বন্ধু মিলে চার লাখ টাকা মূলধন নিয়ে এই কুটিরশিল্পের ব্যবসা শুরু করেন। দুই বছরে মূলধন ছাড়িয়ে গেছে। এখন লক্ষ্য হলো গ্রামাঞ্চলের পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী গড়ে তোলা এবং আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে পাঁচ হাজার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।