গোপন টেন্ডারে জনবল নিয়োগের পঁায়তারা!

মেহেরপুর স্বাস্থ্য বিভাগ

প্রকাশ | ১২ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

মজনুর রহমান আকাশ, গাংনী
আউটসোসির্ংয়ের মাধ্যমে ৪৬ জন চতুথর্ শ্রেণির কমর্চারী নিয়োগ দিতে গোপন টেন্ডার দিয়েছে মেহেরপুর সিভিল সাজর্ন অফিস ও মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল। এর মধ্য দিয়ে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দেয়া ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগে বিভিন্ন মহলে শুরু হয়েছে ব্যাপক তোলপাড়। পুনরায় টেন্ডার দিতে মন্ত্রণালয়ে ডিও দিয়েছেন স্থানীয় এমপি। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের জন্য ২০১৮-১৯ অথর্বছরে আউটসোসির্ং পদ্ধতিতে জনবল সরবরাহের লক্ষ্যে দুটি পত্রিকায় গত ৬ জুন পৃথক দুটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করায় সিভিল সাজর্ন অফিস ও মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল। সিভিল সাজর্ন অফিসের অধীনে ২০ জন ও হাসপাতালের অধীনে ২৬ জন চতুথর্ শ্রেণির কমর্চারী নিয়োগের জন্য জনবল সরবরাহকারী কোম্পানি/প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপত্র আহŸান করা হয়। ২৪ জুন দরপত্র দাখিলের শেষ দিন পেরিয়ে গেলে বিষয়টি অনেকের নজরে আসে। গোপনে টেন্ডার আহŸানের মধ্য দিয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগে রাজনৈতিক মহলে জোর প্রতিবাদ শুরু হয়। এর পরিপ্রক্ষিতে টেন্ডার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে গড়িমসি শুরু করেন সংশ্লিষ্টরা। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কাগজপত্র চাইলে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডা. মিজানুর রহমান বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ফরহাদ হোসেন দোদুল বলেন, তারা গোপনে টেন্ডার করেছে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে। যে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে, তার নাম মেহেরপুরের কেউ কখনো শুনেছে কি-না কেউ বলতে পারছেন না। পত্রিকাটি মেহেরপুর জেলাতেও আসে না। পত্রিকাটির নাম দৈনিক সন্ধানী বাতার্। এই নাম ইন্টারনেটেও খুঁজে পেলাম না। ইংরেজি পত্রিকার নাম হচ্ছে দি ডেইলি আথর্। এসব পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিলে হবে না। বহুল প্রচারিত পত্রিকায় দিতে হবে। পছন্দের ঠিকাদারের মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে তারা গোপনে টেন্ডার করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উদ্দেশ্য অত্যন্ত খারাপ। সিভিল সাজর্ন ডা. জিকেএম শামসুজ্জামান ও তত্ত¡াবধায়ক ডা. মিজানুর রহমান একই ব্যাচমেট। তারা ইচ্ছেমতো নিযোগ বাণিজ্য করতে চাইছে। আমি হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হওয়া সত্তে¡ও আমাকে তারা কিছুই জানায়নি। পুনঃদরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর কাছে ডিও দিয়েছি। সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের সঙ্গে এ বিষয়ে কথাও বলেছি। এদিকে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গোপনে টেন্ডারের মাধ্যমে জনৈক এক ঠিকাদারকে কাজ দেওয়ার প্রক্রিয়া প্রায় চ‚ড়ান্ত। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেন্ডারের শতর্ অনুযায়ী জনবল সরবরাহ করবে। ইতিমধ্যে সম্ভাব্য ওই ঠিকাদারের মাধ্যমে কাকে কাকে নিয়োগ দেয়া হবে তারও একটি খসড়া করা হয়েছে। মোটা অঙ্কের অথের্র মধ্য দিয়েই তাদের নিয়োগ দেয়ার পঁায়তারা চলছে। এমপির বাধার কারণে পুনরায় টেন্ডারের প্রক্রিয়া চলছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। এ ছাড়াও পছন্দের লোকদের নিয়োগ দিতে সিভিল সাজর্ন ও তত্ত¡াবধায়কের ওপর রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের চাপ বাড়ছে। এতে উভয় সংকটে স্বাস্থ্য বিভাগের কতার্ব্যক্তিরা। বিপাকে পড়েছেন সিভিল সাজর্ন ও তত্ত¡াবধায়ক। তবে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন সিভিল সাজর্ন ডা. জিকেএম শামসুজ্জামান ও তত্ত¡াবধায়ক ডা. মিজানুর রহমান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সাজর্ন বলেন, বহুল প্রচারিত পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে এমন কোনো শতর্ নেই। টেন্ডারের নিয়মানুযায়ী যাচাই-বাছাই হচ্ছে। বাধাও আছে। বিষয়টি নিয়ে কি করা যায়, তা পরে জানানো হবে।