কাউনিয়ায় অবাধে মা মাছ ও পোনা নিধন

প্রকাশ | ১২ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

কাউনিয়া (রংপুর) সংবাদদাতা
রংপুরের কাউনিয়ায় বষার্র পানিতে তিস্তা নদী ও খালবিলগুলোতে অবাধে ডিমওয়ালা মা-মাছ ও পোনা নিধন করা হচ্ছে। প্রজনন মৌসুমে এ ধরনের মাছ নিধন ও বিক্রি নিষিদ্ধ হলেও মৎস্য বিভাগ কতৃর্পক্ষ কোনো নজর দিচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে দেশি অনেক প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন জানান, প্রধানত বড় তিস্তা নদী থেকে ছোট তিস্তা নদী, মরাসুতি নদী, মানস নদী ও খাল ও বিলে পানি ঢোকার পথগুলোতে অবাধে মাছ শিকার করা হচ্ছে। বেইলিব্রিজ-গুলশান মোড় সড়কের ব্রিজের নিচে, সাধু, বিজলেরঘুন্ট, মানস নদী, খাল বিলের বিভিন্ন স্থানে বঁাশের চাটাই পুঁতে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে কারেন্ট জাল, সুতিজাল, বাদাইজাল, ভেশাল, কেঁাচ ও জুতি দিয়ে মাছ শিকার চলছে। সাধু গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহমান জানান, মানস নদীতে পানি আসার পর থেকে প্রতিদিন গভীর রাত পযর্ন্ত স্থানীয় কতিপয় মৎস্য শিকারি ডিমওয়ালা মা-মাছ ও পোনা মাছ ধরছেন। রাতভর মাছ শিকারের পর পরদিন স্থানীয় বাজারে এসব মাছ চড়া দামে তারা বিক্রি করেন। চরনাজিরদহ গ্রামের সামছুজ্জামান (৫১) জানান, বষার্ মৌসুম মাছের প্রজনন সময়। নতুন পানি আসতে শুরু করলে নদী, খাল ও বিলে মা-মাছ ডিম ছাড়ে। এতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনায় ভরে ওঠে খাল-বিল ও নদী। কিন্তু এই সময়ই নদী, খাল ও বিলে মাছ ধরার ধুম পড়ে। এতে মিঠা পানির দেশি মাছ এখন বিলীন হওয়ার পথে। স্থানীয় জেলেরা জানান, আষাঢ়ের শুরুতেই ছোট তিস্তা ও মানস নদী বন্যার পানি প্রবেশ করে। নতুন পানি আসায় মা-মাছ ডিম পাড়ার জন্য বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়ায় মাছ শিকারিদের হাতে ধরা পড়ছে। এসব মাছ প্রতিদিন সকালে বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে ডিমভতির্ টেংরা, পুঁটি, মলা, শোল, শিং, মাগুরসহ দেশীয় প্রজাতির মাছ বিক্রি করা হচ্ছে। হারাগাছের বাসিন্দা সেরেকুর ইসলাম বলেন, এখন মাছের প্রজনন কাল। এ সময় মা-মাছ ধরা হলে আগামী মৌসুমে এ অঞ্চলে মাছের তীব্র সংকট দেখা দেবে। ইতোমধ্যে এ অঞ্চলে নদনদী, খাল-বিলে মিঠা পানির চেলা, নন্দই, চাপিলা, টাকি, গোলসা, কালী বাউস, খোলসা, বাতাসি ও ফলিসহ অধর্শতাধিক দেশি প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়েছে। অথচ প্রশাসন এসব মাছ শিকারির বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। উপজেলা মৎস্য কমর্কতার্ মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, জুলাই থেকে নভেম্বর পযর্ন্ত চার মাস মাছের প্রজনন সময়। এই সময় ডিমওয়ালা মা-মাছ ও নয় ইঞ্চির নিচে পোনা ধরা নিষিদ্ধ। মাছ শিকারিদের সচেতনতা বাড়াতে আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কাযর্ক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, মা-মাছ ও পোনা শিকার বন্ধে নদী ও খাল-বিলগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।