গফরগাঁওয়ে কাশবনের পতিত জমিতে সবজি চাষ

দুইশ' পরিবারে সচ্ছলতা

প্রকাশ | ০৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে অনাবাদি ও পতিত জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে শীতকালীন শাক-সবজি -যাযাদি
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা 'আবাদযোগ্য এক ইঞ্চি জায়গাও যেন অনাবাদি না থাকে'। সেই ঘোষণা বাস্তবায়নে কাজ করছেন কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় কৃষক। প্রধানমন্ত্রীর কৃষি উন্নয়নমূলক এ ঘোষণায় ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড়ে অনাবাদি ও পতিত জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে শীতকালীন শাক-সবজি, ভুট্টা ও সরিষা। ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড়ের ২ কিলোমিটার এলাকায় ২০০ পরিবারে সচ্ছলতা এসেছে এসব চাষ করে। ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড়ের কাশবনের দীর্ঘদিন ধরে পতিত এসব জমিতে আবাদের মাধ্যমে বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। নদীর পাড়ে কাশবনের যেসব অনাবাদি জমিতে দিনে-দুপুরে চলাচল করতে ভয় আতঙ্ক কাজ করত সেখানে লাউ, কুমড়া, করলা, শিম, বরবটি, মুলা, পেঁপে, বেগুন, বিভিন্ন শাক, কলা, ভুট্টা ও সরিষা চাষ করছেন এখানকার দুই শতাধিক পরিবার। বিকল্প আয়ের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করে অনেকেই সচ্ছলতার মুখ দেখতে শুরু করেছেন। ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড়ের অসহায় পরিবারগুলো দারিদ্র্যকে জয় করছেন সবজি আবাদের মাধ্যমে। এখন পরিত্যক্ত জমিতেই ধান ও বিভিন্ন শস্যের পরিচর্যায় ব্যস্ত তারা। দত্তেরবাজার, চর লামকাইন, বারইগাঁও ও বিরই নদীর পাড় এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর পাড়ে কাশবনের পরিত্যক্ত স্থানে বিভিন্ন সবজি চাষ করা হচ্ছে। এক সময়ের আতঙ্কের কাশবন পতিত জমি সবটাতেই সবজি চাষ হচ্ছে। সাধারণত নদীর পাড়ের যে অংশ নদীর দিকে নেমে গেছে সেখানে মাচা তুলে লাউ, কুমড়া, করলা, শিমসহ নানা সবজির চাষ হচ্ছে। এ ছাড়া ভুট্টা ও সরিষার চাষ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক সার প্রয়োগে এখানে এসব সবজি উৎপাদন করা হয়। পুরুষের পাশাপাশি নারী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও সবজির কাজে অংশ নিতে দেখা যায়। দত্তেরবাজার ইউনিয়নের দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিশাত হাসান বলেন, দত্তেরবাজার ইউনিয়নের চরলামকাইন, বারইগাঁও ও বিরই নদীর পাড় এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড়ে ২ কিলোমিটারজুড়ে কাশবনের পতিত জমিতে সবজি, ভুট্টা ও সরিষা আবাদ ইতোমধ্যে কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নূর মোহাম্মদ জানান, এবার রবি মৌসুমে সবজি আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে। প্রতি ইঞ্চি জমির সুষ্ঠু ব্যবহারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এ ছাড়া মাঠ দিবসসহ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কৃষকদের পতিত জমিতে চাষাবাদ করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। কৃষকদের উৎসাহী করে উৎপাদন বাড়াতে বর্তমান সরকার প্রণোদনার আওতায় বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করছে।