সিরাজগঞ্জে কম্বল তৈরি করে ভাগ্যের চাকা বদল

প্রকাশ | ১৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

এইচএম মোকাদ্দেস, সিরাজগঞ্জ
ঝুট কাপড়ের তৈরি কম্বল সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার প্রায় ২৫ হাজার মানুষের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। যমুনা নদীতে বাড়িঘর হারিয়ে যখন নিঃস্ব এসব মানুষ অভাব অনটনে দিন কাটাচ্ছেন ঠিক তখনি তাদের বেঁচে থাকার আশীবার্দ হয়ে আসে ঝুটের তৈরি কম্বল। গামেের্ন্টর পরিত্যক্ত টুকরো কাপড় দিয়ে তৈরি করা কম্বল হতদরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষের শীত নিবারণের সম্বল। প্রায় ২ দশক ধরে চলে আসা কম্বল তৈরির কাজটি এ অঞ্চলে এখন শিল্পের খ্যাতি লাভ করেছে। আর এসব কম্বল সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও উত্তরাঞ্চলের হাজার হাজার হতদরিদ্র মানুষের শীত নিবারণের অন্যতম বস্ত্র হয়ে দঁাড়িয়েছে। চলতি শীত মৌসুমে বস্ত হয়ে উঠেছে কাজীপুরের কম্বল তৈরি পল্লীগুলো। কাজীপুরের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে জানা যায়, নদীভাঙনকবলিত কাজীপুর উপজেলার মানুষ নদীতে ঘরবাড়ি হারিয়ে যখন নিঃস্ব তখন স্থানীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন গামেের্ন্টর টুকরো কাপড় কিনে কাজীপুরে নিয়ে এসে কম্বল তৈরি শুরু করে। ধীরে ধীরে পুরো কাজীপুর অঞ্চলে তা ছড়িয়ে পড়ে। কমর্সংস্থান হয় প্রায় ২৫ হাজার নারী-পুরুষের। বতর্মানে কাজীপুরজুড়ে চলছে কম্বল তৈরির মহোৎসব। কাজীপুর উপজেলার অধর্-শতাধিক গ্রামে ঘরে ঘরে চলছে কম্বল তৈরির কাজ। প্রায় শতাধিক গ্রামের ২৫ হাজার শ্রমিক এই শিল্পের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। তাদের জীবনের চাকা ঘোরে সেলাই মেশিনের ঘূণের্নর সাথে তাল মিলিয়ে। এর এতটুকু ব্যত্যয় হওয়ার নয়। অত্যধিক কম মূল্য হওয়ায় এসব কম্বল দরিদ্র মানুষ কিনে তাদের শীত নিবার্রণ করেন। প্রথম দিকে কম্বলগুলো স্থানীয় দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষগুলোর চাহিদা মেটায়। ধীরে ধীরে উত্তরাঞ্চলের মঙ্গাকবলিত হতদরিদ্র মানুষের কাছে এ কম্বল এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এভাবেই কাজীপুরের কম্বল প্রস্তুতকারীদের ভাগ্যের চাকা বদলে যেতে শুরু করে। এ কম্বলের ব্যবসা করেই নদীভাঙা অসংখ্য মানুষ এখন সাংসারিক সচ্ছলতার মুখ দেখতে শুরু করেছে।