টাঙ্গাইলে নদী ভাঙনে বিলীন বসতবাড়ি ও ফসলি জমি

বঙ্গবন্ধু সেতু রক্ষা গাইড ও শহর রক্ষা বঁাধ হুমকির মুখে

প্রকাশ | ১৩ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়া ইউনিয়নে যমুনার ভাঙন Ñযাযাদি
নদী ভাঙনের ফলে বঙ্গবন্ধু সেতু রক্ষা গাইড বঁাধ ও টাঙ্গাইল শহর রক্ষা বঁাধ হুমকির মুখে পড়েছে। বঁাধ দুটি ভেঙে যেকোনো সময় বিস্তীণর্ এলাকা প্লাবিত হয়ে যাতায়াতসহ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হতে পারে। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়ের ৮ নং ওয়াডের্র রানা গাছা এলাকায় ঝিনাই নদীতে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে শহর রক্ষা বঁাধ। গত দুই দিনের ভাঙনে কবরস্থান ও বেশ কয়েকটি বসতভিটা নদী গভের্ বিলীন হয়ে গেছে। যেকোনো সময় রক্ষা বঁাধ ভেঙে শহরে পানি প্রবেশ করতে পারে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, শুকনো মৌসুমে বাংলা ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করায় বন্যার সময় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়। বাংলা ড্রেজারের বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ প্রশাসনে একাধিকবার অভিযোগ করলেও তারা বিষয়টি কোনো আমলে নেননি। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রানাগাছা এলাকাবাসীর। এদিকে বঙ্গবন্ধু সেতু রক্ষা গাইড বঁাধ এলাকায় আবারও ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। বুধবার মধ্যরাত থেকে সেতুর পূবর্ পাড় গরিলাবাড়ী অংশে এ ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা পযর্ন্ত ১০০ মিটার অংশ ধসে ও ১০টি বসতবাড়ি যমুনার পেটে চলে গেছে। গত বছরের ভাঙনের ফলে দ্বিতীয় সেতু রক্ষা বঁাধটি নদীগভের্ বিলীন হওয়ায় এখন ঝুঁকির মুখে পড়েছে প্রথম সেতু রক্ষা বঁাধ। ভাঙন অব্যাহত থাকায় দেশের অন্যতম গুরুত্বপূণর্ স্থাপনা বঙ্গবন্ধু সেতু হুমকির মধ্যে রয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে বিবিএর পক্ষ থেকে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও তা কোনো কাজেই আসছে না বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে। এ ছাড়া টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়নের ৮নং ওয়াডের্র রানাগাছা এলাকার রাস্তাটি (শহর রক্ষা বঁাধ) আংশিক ভেঙে গিয়ে হুমকির মুখে রয়েছে। ইতোমধ্যেই তুলা মিয়ার ৪০ শতাংশ, আজাহার আলীর ৪০ শতাংশ, বাদশা মিয়ার ৪০ শতাংশ, সাহাদত আলীর ৩০ শতাংশ, খালেক মিয়ার ৪০ শতাংশসহ এলাকার বেশ কয়েকজনের জমি নদীগভের্ বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে শত শত বসতভিটা ও ফসলি জমি। স্থানীয়রা জানান, গত দুই দিনে ভাঙনে শহর রক্ষা বঁাধটি অধেের্কর বেশি নদীগভের্ চলে গেছে। বঁাধের বাকি অংশেও ফঁাটল দেখা দিয়েছে। এদিকে, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়া ইউনিয়নের চরপৌলী, রাঙ্গাচিড়া, খাসকুকুয়া এলাকায় যমুনার ভাঙনে অন্তত ৩০টি বসতভিটা নদীগভের্ বিলীন হয়েছে। গত কয়েক দিনের ভাঙনে দুইটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মসজিদ ও ঐহিত্যবাহী চরপৌলী হাট যমুনার পেটে চলে গেছে। শত শত একর ফসলি জমি ও বসতভিটা হুমকির মুখে রয়েছে। ভাঙন রোধে স্থায়ী একটি বঁাধ নিমাের্ণর দাবি এলাকাবাসীর। এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন জানান, ইতোমধ্যেই ভাঙনকবলিত এলাকাসহ শহর রক্ষা বঁাধ পরিদশর্ন করা হয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।