নকলায় জনপ্রিয় হচ্ছে আদর্শ বীজতলা

প্রকাশ | ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি
শেরপুরের নকলা উপজেলা জুড়ে বোরো মৌসুমে আদর্শ বীজতলার জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। আদর্শ বীজতলায় উৎপাদিত ধানের চারা যে কোনো বৈরী আবহাওয়া মোকাবিলা করতে পারে। সুস্থ চারা উৎপাদন ও কোল্ড ইনজুরির ঝুঁকি কম। আদর্শ বীজতলা বীজ খরচ সাশ্রয় করেছে ও ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি করেছে। তাই ধানচাষিরা আদর্শ বীজতলার দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। এদিকে উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে, আদর্শ বীজতলা তৈরি করতে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ফলে কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বীজতলায় রোগ ও পোকা-মাকড়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করা যায়। আদর্শ বীজতলা করলে অল্প জায়গায় চারা দিয়ে বেশি জমি রোপণ করা যায়। এ বীজতলা তৈরিতে বীজ কম লাগে ও রোপণের সময় চারা সাশ্রয় হচ্ছে। এ চারা দিয়ে লাইন লোগো পদ্ধতিতে ধান রোপণ করে গত কয়েক বছর ধরে ভালো ফলনও পাচ্ছেন স্থানীয় কৃষক। এতে বীজ খরচ কম হয়। বীজতলায় রোগবালাই নেই। জমিতে ধান রোপণে চারা কম লাগছে। ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে কৃষক লাভবান হচ্ছে। আদর্শ বীজতলার ওপর কোনো বাড়তি পানি জমা হতে পারে না। প্রতিটি চারা সমানভাবে আলো, বাতাস, সার ও পানি পায়। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ বছর নকলায় ১২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর ১৮০ হেক্টর জমিতে আদর্শ বীজতলা করা হয়েছিল, যা এবার বেড়ে ২২০ হেক্টর হয়েছে। নকলা পৌরসভার পাইস্কা এলাকার কৃষক আমজাদ জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী দুই হাত চওড়া করে আদর্শ বীজতলা করছেন। প্রতি বীজতলার চারপাশে এক ফুট নালা রেখেছেন। এর ফলে ভালোমানের চারা পাচ্ছে না এবং উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে। কৃষক বজলু জানান, স্থানীয় পদ্ধতির চেয়ে আদর্শ পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করলে বীজ, শ্রম, সার ও সেচ খরচ কম লাগে এবং চারার মান ভালো পাওয়া যায়। কৃষক মোতালেব জানান, সনাতন পদ্ধতিতে যে জায়গায় ৫০ কেজি বীজ প্রয়োজন হতো সেখানে আদর্শ পদ্ধতিতে ৩৫ কেজি বীজ লাগে। ফলে বীজতলা তৈরিতে খরচ কম হয়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, কৃষকদের কমিউনিটি (আদর্শ) বীজতলার বিষয়ে যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। আগাছা দমন, সার প্রয়োগ, সেচ দেওয়া, বালাই দমন সহজ হয় এবং সুস্থ-সবল চারা উৎপাদন হয়। হিসাব মতে, এক শতক বীজতলার চারা দিয়ে প্রায় ২০ শতক ধানের জমি রোপণ করা যায়। এ কারণে মাত্র একটি বা দুটি চারা দিয়ে একটি গোছা তৈরি করা যায়।