শাহজাদপুরে বেতশিল্প বিলুপ্তির পথে

প্রকাশ | ১৯ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা
শাহজাদপুরে ঐতিহ্যবাহী বঁাশ-বেতশিল্প এখন বিলুপ্তির পথে। পুঁজির অভাব, উপকরণের দুষ্প্রাপ্যতা ও পণ্যের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় উপজেলার পাথালিয়াপাড়া ও নরিনা গ্রামের ৫০টি পরিবার অভাব-অনটনে দিন কাটাচ্ছে। এক সময়ে পাথালিয়াপাড়া ও নরিনা গ্রামের শতাধিক পরিবার নিপুণ হাতে তৈরি করে উন্নতমানের ধামা, ঢোল, ডালা, চাটাই, খাড়ই, হঁাড়ি, কুলা, পালা, চালন, মোড়া, ঝুড়ি, চেয়ার, বুকসেলফ, কলমদানিসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি করে জীবিকা নিবার্হ করতেন। তখন বাজারে বঁাশ ও বেতের তৈরি এসব পণ্যের চাহিদা থাকায় অনেক মানুষ বাড়িতে গিয়ে অডার্র দিত। এতে তাদের জীবনযাপন স্বাচ্ছন্দ্যময় ছিল। কিন্তু বতর্মানে চাহিদা না থাকায় এসব পরিবারে অভাব-অনটন নেমে এসেছে। তারপরও বারৈয়ার ঢালা বহরপুর এলাকার হিন্দু পরিবারের বিরাট একটি অংশ পূবর্পুরুষের পেশাকে এখনো অঁাকড়ে পড়ে আছেন। বেত শিল্পের সঙ্গে জড়িত পাথালিয়া পাড়া গ্রামের কাদের ও নরিনা গ্রামের সুনীল চন্দ্র দাশ জানান, আগে এলাকায় প্রচুর বেত উৎপাদন হতো। স্বল্পমূল্যে অনায়াসে বেত পাওয়া যেত। এখন বেত নেই বললেই চলে। দূর-দূরান্ত থেকে বেত কিনে আনতে হয়। দামও অনেক। বতর্মানে বেতের তৈরি মাঝারি আকারের একটি ধামার দাম ১৫০০ টাকা পড়ে। প্রয়োজন থাকলেও এত বেশি দামে অনেকেই কিনতে চায় না। এ পেশায় জড়িত আরো অনেকে জানান, মাত্র কয়েক বছর আগেও এ অঞ্চলে বঁাশ সহজলভ্য ছিল। ৪০ থেকে ৫০ টাকায় একটি বঁাশ কেনা যেত। এখন একটির দাম দেড়শ থেকে দুইশ টাকা। কিন্তু সে অনুপাতে তৈরি জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি। পাশাপাশি প্লাস্টিকের তৈরি দ্রব্যাদির কারণে এগুলোর চাহিদাও কমে গেছে। এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত পরিবারগুলোর দাবিÑপরিবারভিত্তিক ব্যাংকঋণ প্রদান, আধুনিক প্রযুক্তি সম্পকের্ প্রশিক্ষণ ও কারিগরি উপকরণ সরবরাহের ব্যবস্থা করলে কুটির শিল্পটাকে একমাত্র অবলম্বন করে টিকে থাকা এখনো সম্ভব।