আমতলীতে কলাগাছ ও বাঁশের অস্থায়ী মিনারেই শ্রদ্ধা নিবেদন!

প্রকাশ | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ৭১ বছরেও নির্মাণ হয়নি বরগুনার আমতলী ও তালতলী উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার। মিনার নির্মাণ না করায় ভাষা শহীদদের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা জানাতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। কলাগাছ ও বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী মিনার নির্মাণ করে শহীদ দিবস পালন করছে তারা। কিছু প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী শহীদ মিনার থাকলেও ভাষা দিবস আসলেই ওই শহীদ মিনারগুলো ঘষা-মাজা করা হয়। ভাষা দিবস শেষ হয়ে গেলে মিনার অযন্তে আর অবহেলায় পড়ে থাকে। দ্রম্নত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। জানা গেছে, আমতলী-তালতলী দুই উপজেলায় ৩৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে আমতলী উপজেলায় ১৫২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৩টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২১টি দাখিল মাদ্রাসা, একটি আলিম মাদ্রাসা, ৪টি ফাজিল মাদ্রাসা, ৫টি কলেজে শহীদ মিনার রয়েছে। অবশিষ্ট বিদ্যালয়ে কোনো শহীদ মিনার নেই। অন্যদিকে উপজেলার কোনো মাদ্রাসায়ই শহীদ মিনার নেই। শিক্ষার্থীরা প্রতি বছর কলাগাছ ও বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে শহীদ দিবস পালন করছে। এছাড়া যেগুলো রয়েছে সেগুলো অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে আছে। প্রতি বছর শহীদ দিবসের দুই-এক দিন আগে আমতলী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ অন্যান্য শহীদ মিনার ঘষা-মাজা করা হয়। দিবস শেষ হয়ে গেলে কেউ ওই মিনারের আর খবর রাখে না। ওই শহীদ মিনারে গড়ে ওঠে মাদক সেবনের নিরাপদ আশ্রয়। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কাউনিয়া ইব্রাহিম একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গুরুদল বঙ্গবন্ধু নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়, এমইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বন্দর হোসাইনিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, তারিকাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গাজীপুর সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা, মানিকঝুঁড়ি মাহমুদিয়া দাখিল মাদ্রাসা, পঁচাকোড়ালিয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কড়াইবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসাসহ অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। আমতলী এমইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জিসাদ ও হুমায়রা আক্তার জানায়, বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই, কলেজের শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিতে হয়। তারা সরকারের কাছে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি জানায়। তারিকাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইউনুচ মিয়া বলেন, কলাগাছ ও বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে। আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সফিকুল ইসলাম বলেন, শহীদ মিনার নির্মাণে সরকারিভাবে উদ্যোগ নিলে তা বাস্তবায়ন করা হবে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জিয়া উদ্দিন মিলন বলেন, উপজেলার ১১টি বিদ্যালয় ও দুটি কলেজে শহীদ মিনার আছে। কোনো মাদ্রাসায় শহীদ মিনার নেই। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা প্রয়োজন। আমতলী ইউএনও আশরাফুল আলম বলেন, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য প্রকল্প দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের দেয়া প্রকল্প অনুসারে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।