বিষমুক্ত শুঁটকিতে ভাগ্যের চাকা বদল

প্রকাশ | ২১ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা
চট্টগ্রামের আনোয়ারার রায়পুর ইউনিয়নের সাগর উপক‚লে শুঁটকি শুকানো কাজে ব্যস্ত জেলেরা Ñযাযাদি
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপক‚লের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে শুঁটকি শুকানোর কাজ। উপক‚লের গহিরার চরে বিষমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন শুঁটকিপল্লী গড়ে উঠেছে। এতে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপক‚লের জেলেরা। সরেজমিনে দেখা গেছে, সাগরে পাতানো ভাসমান ও টং জালে আহরিত সামুদ্রিক বিভিন্ন প্রজাতির মাছ জেলেদের নৌকা থেকে উঠানো হচ্ছে। সেখানে জেলেদের কাছ থেকে পছন্দের মাছগুলো কিনে মহালে নিয়ে যাচ্ছে ব্যবসায়ীরা। এসব মাছ প্রথমে মহালে সংরক্ষণ করা হয়। পরে পরিশুদ্ধ করার পর এসব কঁাচা মাছে আংশিক লবণ মেশানো হয়। তারপর গিট তৈরি করে এগুলো শুকানোর জন্য ওই মহালের একাধিক মাচায় টাঙানো হয়। চিংড়ি ও ফাইস্যা জাতীয় মাছগুলো বিছানো পলিথিনে ছিটিয়ে শুকানো হয়। উৎপাদিত শুঁটকিগুলোর মধ্যে উলেখযোগ্য হচ্ছে লইট্যা, ছুরি, ফাইস্যা, চইক্যা, পোয়া ও চিংড়িসহ নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ। রায়পুর ইউনিয়নের বাতিঘর এলাকা থেকে বার আউলিয়া পযর্ন্ত তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে শুঁটকি শুকানোর কাজ। এতে পুরুষের পাশাপাশি নারী ও শিশু শ্রমিকরাও কাজ করছেন। জেলে ও ব্যবসায়ীরা জানান, তিন কিলোমিটার সমুদ্র সৈকতে ৩০ জনের বেশি ব্যবসায়ীর তত্ত¡াবধানে ৫০০ শ্রমিক কাজ করছেন। তবে সমুদ্র থেকে মাছ ধরা ও শুঁটকি শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন ৬ শতাধিক পরিবারের লোকজন। পেকুয়া থেকে আসা জেলে ছৈয়দ নুর (৩০) জানান, তার নিজস্ব অথার্য়নে গহিরার চরে শুঁটকি উৎপাদনের জন্য একটি মহাল তৈরি করেছেন। প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ কেজি সামুদ্রিক মাছের শুঁটকি উৎপাদন হচ্ছে ওই মহালে। কোনো ধরনের কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়াই প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদিত হচ্ছে এসব শুঁটকি। এখানকার উৎপাদিত শুঁটকি স্বাদে ও মানে প্রসিদ্ধ হওয়ায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। স্থানীয় খুচরা বাজারে প্রতি কেজি লইট্যা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, ফাইস্যা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, ছুরি ৭০০ থেকে ৯৫০ টাকা, বড় চিংড়ি (চাগাইছা) ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শুঁটকি মহালের মাছের গুঁড়া পোল্ট্রি ফামর্ ও ফিস ফিডের জন্য সরবরাহ হয়ে থাকে। আনোয়ারা উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কমর্কতার্ সৈয়দ হুমায়ন মোরশেদ বলেন, উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নে শুঁটকির ব্যবসায় স্থানীয় লোকজনের অভাব ঘোচাচ্ছেন। জেলে ও ব্যবসায়ীরা যাতে নিবিের্ঘœ ব্যবসা করতে পারে সেজন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে।