চট্টগ্রামে সরিষা আবাদের শীর্ষে হাটহাজারী

তেল ও গো-খাদ্যে আসবে ৬ কোটি টাকা

প্রকাশ | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় এবার সরিষা আবাদ করে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন চাষিরা। এবারের লক্ষ্যমাত্রা ৯০ হেক্টর ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ ঘোষণায় ২২০ হেক্টরের স্থলে আবাদ হয়েছে ৪৪২ হেক্টও, যা চট্টগ্রামের সব উপজেলাকে ছাড়িয়েছে। সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবারের মতো এবারও হাটহাজারীতে গেল বছরের শেষার্ধে মাত্র ৯০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ শুরু করে উপজেলা অফিস। এর মধ্যে সরকারের বিশেষ ঘোষণা এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না এ নির্দেশনাকে কাজে লাগিয়ে মাঠে নামেন কৃষি কর্মকর্তা। চাষিদের মাঝে সরিষা আবাদের সুফল তথা স্বল্প খরচে আবাদ, পরিবারের ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণ, গো-খাদ্য (খৈল), জৈবসার উৎপাদন, মধুসহ আর্থিক লাভের নানা বিষয় তুলে ধরেন। বাড়িতে বাড়িতে উঠান বৈঠক, নামাজের পর মসজিদে বয়ান, চায়ের দোকানে আড্ডা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, জনপ্রতিনিধি এবং স্থানীয় মিডিয়া কর্মীদের নিয়ে প্রচুর প্রচারণা চালান। বিনামূল্যে বিতরণ করেন ভালো জাতের সরিষা বীজ ও প্রয়োজনীয় সার। দিতে থাকেন সবধরনের পরামর্শ। একের পর এক পরিদর্শন করেন সরিষাক্ষেত। সরিষা ফুলের হলুদ আভায় ছেয়ে যায় উপজেলার সবক'টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার মাঠের পর মাঠ। স্বল্প খরচ তদুপরি কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় খুশি কৃষকরা। আমন ধান ঘরে তোলার পর বোরো চাষের মধ্যেবর্তী সময়ে সরিষা চাষে বাড়তি ফলনে খুশি তারা। উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের কৃষক মনছুর শাহ প্রকাশ লাল ভান্ডারী প্রায় ৮৫ বিঘা সরিষা আবাদ করেছেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে উৎসাহী হয়ে সরিষা আবাদ করে নিজেকে সফল দাবি করে বলেন, বোরো ধানের আগেই সরিষা ঘরে তুলে পরিবারের ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাজারজাত করে বাড়তি টাকা উপার্জন করতে পারবেন। পাশাপাশি সরিষা থেকে আহরিত গো-খাদ্য (খৈল) তার ডেইরি ফার্মের ব্যয় কমিয়ে দেবে। খৈলকে জৈবসার হিসেবে ব্যবহার করে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করা যাবে। ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের প্রকাশ বড়ুয়া প্রায় ২৫০ কানি সরিষা চাষ করে এগিয়ে আছেন। এ ছাড়া উদালিয়া এলাকার মিজান ফারুক, চারিয়ার আতাউলস্নাহসহ কয়েকশ' কৃষক সরিষা চাষ করেছেন। জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন শিকদার বলেন, হাটহাজারী উপজেলায় এবার আবাদ করা সরিষা থেকে ৫৩০ মেট্রিক টন সরিষা বীজ পাওয়া যাবে। যার বাজারমূল্য ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা। ভোজ্যতেল উৎপাদন হবে ১৭৬ মেট্রিক টন, যার বাজারমূল্য ৪ কোটি টাকার বেশি। একইসঙ্গে গো-খাদ্য উৎপাদন হবে ৩৫৪ মেট্রিক টন, যার বাজারমূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। তিনি বলেন, 'এ সফলতার প্রধান কৃষকরা। তারা বেশি আবাদ করেছেন বিধায় আমরা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছি। আগামীতে আরও বেশি পরিমাণে সরিষা আবাদ করা হবে।