নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তামাক চাষ

প্রকাশ | ২২ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

মো. মনজুর আলম, চকরিয়া
কক্সবাজারের চকরিয়ায় সংরক্ষিত বনভূমির ভেতর খাসজমি ও মাতামুহুরী নদীর তীর সংলগ্ন এলাকায় পরিবেশ বিধ্বংসী তামাক চাষ এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। চলতি মৌসুম থেকে তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করতে মাঠপযাের্য়র চাষিদের নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে র‌্যালি ও মানববন্ধসহ জনসচেতনতামূলক নানা কাযর্ক্রম পরিচালনা করলেও কোন কাজে আসেনি প্রশাসনের এ উদ্যোগ। তামাক কোম্পানী গুলোর লোভনীয় ফঁাদে পড়ে অন্যান্য বছরের ন্যায় চলতি বছরও রেকডর্ পরিমাণ জমিতে তামাক চাষে মাঠে নেমেছে চাষিরা। ব্যক্তি মালিকানাধীন কৃষি জমির পাশাপাশি সংরক্ষিত বনাঞ্চল লাগোয়া ও মাতামুহুরী নদীর দুই তীরের খাস জমিতেও তামাক চাষের ভয়াবহ আগ্রাসন শুরু হয়েছে। সংরক্ষিত বনের ভেতর ও নদীর তীরে তামাক চাষের ব্যাপারে সরকারীভাবে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা বতর্মানে কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ রয়েছে এসব নীতিমালার নিয়ম। আর এ ব্যাপারে প্রশাসনিক কোন পদক্ষেপই সম্প্রতি সময়ে চোখে পড়ছেনা। কৃষি জমিতে তামাক চাষের ফলে চলতি মৌসূমে বোরোর আবাদ ও রবিশস্য উৎপাদনে ব্যাপক বিপযের্ষর আশংকা দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সরকারী নিদের্শনা উপেক্ষা করে চকরিয়া উপজেলার বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের বমু বনবিট ও সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের মানিকপুর বনবিটের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে এবং মাতামুহুরী নদী তীরের বমু বিলছড়ি, সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা, কৈয়ারবিল, বরইতলী, লক্ষ্যারচর, ফঁাসিয়াখালী, ডুলাহাজারা ও চিরিঙ্গা ইউনিয়নের অন্তত এক হাজার একর খাস জমিতে তামাকের আবাদ শুরু হয়েছে। বেশির ভাগ এলাকায় ইতোমধ্যে কৃষকদের রোপন করা তামাকের চারা বড় হতে শুরু করেছে। আগামী মাস দু’য়েকের মধ্যেই শুরু হবে তামাক পুড়ানোর কাজ। এ লক্ষ্যে বনাঞ্চলের আশপাশে ও লোকালয়ে আগেভাগে শত শত তামাক চুলীর নিমার্ণকাজও শুরু হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফঁাসিয়াখালী রেঞ্জের অধীন বমু বনবিটের প্রায় দুই হাজার একর বনভূমি যথাযথ রক্ষণাবেক্ষনের জন্য ২০০৫ সাল থেকে লামা বনবিভাগের কাছে হস্থান্তর করা হয়। বতর্মানে এ বনবিটটি লামা সদর রেঞ্জের নিয়ন্ত্রণাধীন। গত বেশ কয়েক বছর ধরে স্থানীয় কাঠ পাচারকারী চক্র তামাক পোড়ানোর জন্য নিবির্চারে বনজ সম্পদ উজাড়ের কারণে সংশ্লিষ্ট বনবিটের সংরক্ষিত বনাঞ্চল এখন ন্যাড়া পাহাড়ে পরিণত হয়েছে। সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) চকরিয়া উপজেলা সভাপতি অধ্যাপক এ কে এম শাহাবুদ্দিন বলেন প্রশাসনিকভাবে এতো নাগরিক সচেতনার পরও চকরিয়া উপজেলার সংরিক্ষত বনাঞ্চল সংলগ্ন দশটি ইউনিয়নের অন্তত ১২ হাজার একর জমিতে পরিবেশ বিধ্বংসী তামাকেরর আগ্রাসন চলছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।