নবগঙ্গার বুকজুড়ে ধান চাষ!

প্রকাশ | ২৪ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

রূপক মুখাজির্, লোহাগড়া (নড়াইল) থেকে
নড়াইলের লোহাগড়ার ওপর দিয়ে প্রবাহিত স্রোতস্বিনী নবগঙ্গা শুকিয়ে যাওয়ায় জেগে ওঠা চরে চলছে ধান চাষ Ñযাযাদি
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত এককালের খরস্রোতা নবগঙ্গা নদী শুকিয়ে শীণর্কায় খালে পরিণত হয়ে পড়েছে। প্রতি বছর বষার্ মৌসুমে পলি মাটি পড়ায় নদীর বিস্তীনর্ এলাকা জুড়ে জেগে উঠেছে অসংখ্য ছোট-বড় চর। স্থানীয় ভূমি দস্যূরা ভূমিহীন সেজে নামে-বেনামে চর দখল করে ধান চাষ করছে। শুকিয়ে যাওয়া নবগঙ্গা নদী এখন ধান চাষের ক্ষেতে পরিণত হয়েছে । নাব্য সংকটে নৌ যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে অনেক আগেই। জানা গেছে, নড়াইল জেলার মধ্যে সমৃদ্ধ জনপদ লোহাগড়ার ওপর দিয়ে মধুমতি, নবগঙ্গা ও বানকানা নদী প্রবাহিত। এছাড়া রয়েছে অসংখ্য খাল, বিল ও বাওড়। বানকানা নদীর কোন অস্তিত্বই আজ আর লোহাগড়ায় নেই। ৫০ বছর আগেই সমতল ভূমিতে পরিণত হয়ে পড়েছে এক সময়কার বানকানা নদী। নবগঙ্গা নদী হলো লোহাগড়া উপজেলার অন্যতম প্রধান নদী। নাব্যতা সংকটের কারণে নবগঙ্গা নদীর সেই জৌলুস আর নেই। নেই সেই আগ্রাসী রূপ। নবগঙ্গা নদীর কুন্দশী এলাকা থেকে মহাজন এলাকা পযর্ন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটারের অবস্থা এতটাই সঙ্গীন যে, অনেক এলাকায় নবগঙ্গা শুকিয়ে পায়ে চলা সরু পথে পরিণত হয়ে পড়েছে। এমনকি নদীতে বাঁধ দিয়ে মৎস্য শিকারীরা মাছ শিকার করছে। অনুসন্ধান কালে আরও জানা গেছে, নবগঙ্গা নদীর প্রায় ৩৫ কিঃ মিঃ এলাকা জুড়ে জেগে উঠেছে ছোট-বড় অসংখ্য চর। স্থানীয় ভূমি দস্যূরা নামে-বেনাম ভুয়া কাগজ পত্র তৈরী করে জেগে উঠা চর দখল করে ধানের চাষাবাদ করছে। লোহাগড়ায় চর দখলের ঘটনা প্রতি বছরই বাড়ছে। সেই সাথে বাড়ছে মামলা-মোকদ্দমা। মৃতপ্রায় নবগঙ্গার নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য বিগত ২০১১-১২ অথর্ বছরে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মল্লিকপুর থেকে মহাজন পযর্ন্ত খনন কাজ করা হলেও তা কোন কাজে আসেনি। প্রতি বষার্ মৌসুমে পলি পড়তে পড়তে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। লোহাগড়া পৌরসভা মেয়র আশরাফুল আলম নবগঙ্গার বতর্মান অবস্থা সম্পকের্ আক্ষেপ করে বললেন, ‘নদী শাসন আইন নবগঙ্গার জন্য কাযর্কর হয় না। প্রকাশ্যে চলছে নবগঙ্গা নদী দখলের প্রতিযোগিতা’। নদী বাঁচাও আন্দোলনের নেতা সাংবাদিক শেখ সদর উদ্দীম শামীম বলেন, ‘নবগঙ্গার নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য নদী খনন জরুরি হয়ে পড়েছে’।