স্বতন্ত্র হল ও নিরাপদ খাদ্য দাবি

রাবিতে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

প্রকাশ | ২৮ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

রাবি প্রতিনিধি
স্বতন্ত্র আবাসিক হল, প্রার্থনা কক্ষ ও নিরাপদ খাদ্যের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনসংলগ্ন প্যারিস রোডে সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। মানববন্ধনে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী পস্নাবন কুমার বলেন, 'আমি প্রথম থেকেই হলে গরুর মাংস দিতে দেখে আসছি। এখনো তা চলছে। আমরা অন্য ধর্মকে ছোট করে দেখছি না, কিন্তু স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করার অধিকার আমাদেরও দিতে হবে। আমাদের যদি আলাদাভাবে দেখা হয় তাহলে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা হলের ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক।' সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের সভাপতি তন্ময় কুমার কুন্ডু বলেন, 'হলে ধর্ম পালন করা আমাদের জন্য কষ্টকর। একই চামচ দিয়ে গরু ও মুরগির মাংস বিতরণ করা হচ্ছে। আমরা সনাতনী বলার পরও আমাদের সঙ্গে এমনটা প্রতিনিয়তই হচ্ছে। আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি, তারা আশ্বস্ত করেন কিন্তু কোনো সমাধান করেন না। সনাতনীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা না রেখে বর্তমানে সব হলেই গরুর মাংস দেওয়া হচ্ছে, যা আমাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এখানে সবাই অসাম্প্রদায়িক জাতি হিসেবে পরিচিত।' মানববন্ধনে ফলিত রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী নয়ন চন্দ্র দাস বলেন, 'আমাদের সহপাঠীরা গরুর মাংস খাচ্ছে এতে সমস্যা নেই। কিন্তু আমাদের যেটা নিষিদ্ধ সেটার কথা প্রশাসনের ভাবতে হবে। আমাদের না খেয়ে নিয়মিত ক্লাস করতে হচ্ছে। প্রশাসনকে আমাদের খাবারের নিশ্চয়তা দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় এমনটি কাম্য নয়। আমাদের খাবারসহ সবকিছু নিশ্চিত করে স্বতন্ত্র হলের দাবি করছি আমরা। আমরা চাই, সাম্প্রদায়িক চেতনাকে বাদ দিয়ে সবাই মিলে থাকা। যেটা আমাদের দেশে হাজার বছর ধরে চলে এসেছে।' চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী মনমোহন বাপ্পা বলেন, 'আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তৈরি হয়েছিল সব শিক্ষার্থীর সমান সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য। কিন্তু আমরা দেখছি সংখ্যা গরিষ্ঠদের বেশি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কারণ হিসেবে বলব, প্রত্যেকটা হলের ক্যান্টিন ডাইনিং এখন বন্ধ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন যদি সমানভাবে চিন্তা করত তাহলে হলের ক্যান্টিন বা ডাইনিং বন্ধ রাখত না। আজকে যদি আমাদের জন্য খাবার ব্যবস্থা করা হতো, আমাদের জন্য প্রার্থনার জায়গা থাকত তাহলে আমাদের স্বতন্ত্র হলের জন্য রাস্তায় দাঁড়াতে হতো না।' বিপু চন্দ্র রায়ের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে দুই শতাধিক সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থী অংশ নেন।