মাথাভাঙ্গা নদীতে কারেন্ট জাল দিয়ে চলছে মৎস্য শিকার

নিধন হচ্ছে দেশি জাতের মাছের পোনা

প্রকাশ | ২৬ মে ২০২৩, ০০:০০

দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় গাছের ডালপালা দিয়ে 'কোমড়' তৈরি করে মাছ শিকারের ফলে স্রোতে বাধা পেয়ে ভরাট হয়ে যাওয়া মাথাভাঙ্গা নদী -যাযাদি
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় শ্রোতস্বিনী মাথাভাঙ্গা নদীতে অবধৈ কারেন্ট জাল ও কোমর দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এতে নব্যতা হারাচ্ছে নদী। নিধন হচ্ছে দেশীয় বিভিন্ন ধরনের মাছের পোনা। এখনই ব্যবস্থা না হলে মাছশূন্য ও ভরাট হয়ে যাবে এ নদীটি। জানা গেছে, জেলার একমাত্র শ্রোতস্বিনী মাথাভাঙ্গা নদীকে হৃদপিন্ড বলা হয়ে থাকে। পদ্মার শাখা নদী মাথাভাঙ্গা কুষ্টিয়া থেকে আলমডাঙ্গার হাটবোয়ালিয়া হয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলায় প্রবেশ করেছে। এই অঞ্চলের একমাত্র নদী মাথাভাঙ্গা। এই নদীতে এক শ্রেণির অসাধু মৎস্যজীবীরা কারেন্ট জাল ও কোমর দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করছে। গাছের ডালপালা দিয়ে কোমর তৈরি করে মাছ শিকারের ফলে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে স্রোত, যেখানেই স্রোত বাধা প্রাপ্ত হয়, সেখানেই পড়ে পলিমাটি। যে কারণে ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদী। এক দিন হয়তো এই নদীটি স্রোতহীন মরা নদীতে পরিণত হয়ে পড়বে। অন্যদিকে কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ শিকারে সরকারের কড়া নির্দেশনা থাকলেও তা মানছেন না অসাধু মৎস্যজীবীরা। প্রতিদিন কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ শিকারের ফলে নিধন হচ্ছে গলদা চিংড়ি মাছের পোনাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। দেখা গেছে, জয়নগর থেকে শুরু করে গলাইদড়ি ঘাট হয়ে আমডাঙ্গা এবং সুবুলপুর, রঘুনাথপুর, পাটাচোরা থেকে দামুড়হুদার বাস্তপুর পর্যন্ত অসংখ্য কোমর দেওয়া হয়েছে নদীতে। এই কোমর দেওয়ার কারণে নদী হয়ে পড়ছে অপরিচ্ছন্ন। কোমর উচ্ছেদের ব্যাপারে মৎস্য অফিস কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় দিন দিন বাড়ছে কোমরের সংখ্যা। এলাকাবাসীর দাবি, ঐতিহ্যবাহী মাথাভাঙ্গা নদীকে বাঁচাতে কোমর স্থাপনকারী ও কারেন্ট জাল দিয়ে অসাধু মাছ শিকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। চুয়াডাঙ্গা মাথাভাঙ্গা নদী বাঁচাও আন্দোলনের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ হামিদুল হক মুন্সি বলেন, নদী রক্ষায় প্রশাসনের যেটুকু দায়িত্ব সেটুকু পালন করুক। সরকারি সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আছে। সাধারণ জনগণের সচেতন হতে হবে। নদীর ভেতর বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে মাইকিং করে কোমর দেওয়া বন্ধ করতে হবে। প্রশাসন আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করছে। জানতে চাইলে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা দীপক কুমার পাল বলেন, ইতোমধ্যে আমরা নদী থেকে কোমর অপসারণ ও বর্জ্য যাতে না ফেলতে পারে, তার জন্য কাজ করছি। পানি উন্ন্‌য়ন বোর্ড মিলে এ মাসের ভেতরই সব কোমর অপসারণ করা হবে। এ বিষয়ে দামুড়হুদা ইউএনও রোকসানা মিতা বলেন, মাথাভাঙ্গা নদীতে যেসব কোমর আছে, সেগুলো মৎস্য কর্মকর্তার সঙ্গে বসে দ্রম্নত অপসারণ করবো। আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে মাইকিং করা হবে। যাদের কোমর আছে, তারা যদি অপসারণ না করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং পরে যাতে কেউ কোমর ও কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরতে না পারে, তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।