আড়াইহাজারে পরকীয়া ও কলাপাড়ায় কলহের জেরে স্ত্রীকে হত্যা

দুই জেলায় পানিতে ডুবে ৩ শিশুর মৃতু্য

প্রকাশ | ৩১ মে ২০২৩, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে পরকীয়ার জের ধরে স্ত্রীকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে হত্যা করে পালিয়েছেন পাষন্ড স্বামী। এছাড়াও পানিতে ডুবে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় দুই শিশু এবং নীলফামারীর সৈয়দপুরে আরেক শিশুর মৃতু্য হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত ডেস্ক রিপোর্ট- আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে নিজের বাড়ির ভাড়াটিয়া মহিলার সঙ্গে পরকীয়ার জেরে এবং ওই নারীকে বিয়ে করতে না দেওয়ায় স্ত্রী নাজমা আক্তারকে (৩৫) বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে স্বামী ও তার পরিবার পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়নের দুপ্তারা মধ্যপাড়া গ্রামে। পুলিশ হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করেছে। নিহত নাজমা আক্তার ওই গ্রামের মধ্যপাড়া এলাকার মো. ছিদ্দিক মিয়ার মেয়ে। নিহতের ভাই রোহেন নবী জানান, পশ্চিমপাড়া এলাকার মোতালিবের ছেলে আমিরের সঙ্গে তার বোনের ১৩ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের তিন সন্তান রয়েছে। আমির মালয়েশিয়া প্রবাস থেকে ৩-৪ মাস আগে দেশে এসে তারই বাড়ির এক মহিলা ভাড়াটিয়ার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। ঘটনা জানাজানি হলে তার বোন তাতে বাধা দেয়। এ নিয়ে প্রায় সময় তাদের মধ্যে কলহ হতো। মঙ্গলবার সকালে আমির ওই ভাড়াটিয়া মহিলাকে বিয়ে করবে বলে স্ত্রীকে জানান। এতে নাজমা রাজি না হলে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ওইসময় আমির তাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন এবং লাশ ঘরে রেখে পরিবার নিয়ে পালিয়ে যান। তারা লোক মারফত সংবাদ পেয়ে বোনকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তারা পুলিশে খবর দেন। আড়াইহাজার থানার ওসি (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম সোহাগ জানান, লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ। উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের মুসলস্নীয়াবাদ থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার সকালে স্ত্রীকে হত্যা করেন আলম। প্রাণ হারানো ৫০ বছর বয়সি মমতাজ বেগম উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের মুসলস্নীয়াবাদ গ্রামের আব্দুর রশিদ মুসলস্নীর মেয়ে এবং তার স্বামী ৫৮ বছর বয়সি শাহ আলম হাওলাদার একই গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পর থেকেই মমতাজকে তার স্বামী নানা অজুহাতে নির্যাতন করতেন। শাহ আলম কোনো কাজ কর্ম না করায় মমতাজ বেগম বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে সংসার চালাতেন। এ নিয়ে সংসারে প্রায়শই তাদের কলহ হত। এর জেরে সোমবার গভীর রাতে মহিপুরের লতাচাপলী ইউনিয়নের মুসলস্নীয়াবাদ তার নিজ বাড়িতে পুকুর পাড়ে বাগানের মধ্যে নিয়ে যায়। আসামির পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনাস্থলে ওড়না দিয়ে গলায় প্যাচ দিয়ে গলায় ফাঁস এবং মুখ চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার আবুল খায়ের জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শাহ আলম হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি জানান, চুয়ডাঙ্গার দর্শনায় পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মর্মান্তিক মৃতু্য হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দুপুরে। পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, দুপুর ২টার দিকে দর্শনা পৌরসভার ঈশ্বরচন্দ্রপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে সিহাব আলি (৮) ও তরিকুল আলমের ছেলে হুসাইন আলম (১০) বাড়ির পাশের পুকুরে গোসল করতে আসে। তারা দুইজন বাড়িতে না গেলে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। পরে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে গ্রামের লোকজন পুকুরে গোসল করতে এসে তাদের লাশ পানিতে ভেসে উঠতে দেখে। গ্রামবাসী লাশ তুলে বাড়িতে পাঠায়। সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি জানান, নীলফামারীর সৈয়দপুরে পুকুরের পানিতে ডুবে সাজু (১৪) নামের চতুর্থ শ্রেণির এক শিশু শিক্ষার্থীর মৃতু্য হয়েছে। গত রোববার শহরের উপকণ্ঠে কামারপুকুর ইউনিয়নের ধলাগাছ মতিরবাজার এলাকায় এ মৃতু্যর ঘটনা ঘটে। ওই শিশু শহরের কয়ানিজপাড়া দোলাপাড়া এলাকার জাবেদ আলীর ছেলে সাজু। জানা যায়, ঘটনার দিন সে ও তার চার সহপাঠী মিলে বাড়ির অদূরে ধলাগাছ মতির এলাকায় যায়। এ সময় তারা সেখানে একটি পুকুরে গোসল করতে নামে। এরপর তার চার সহপাঠী সাঁতার কেটে পুকুরের এক পাশে থেকে অপর পাশে গিয়ে উঠলেও সাজু পানিতে ডুবে যায়। সহপাঠীরা তার কোনো হদিস না পেয়ে ঘটনাটি আশপাশের লোকজনকে জানায়। পরে আশপাশের লোকজন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সৈয়দপুর স্টেশনকে জানায়। খরর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা এসে শিশু সাজুকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে তাকে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।