টাঙ্গাইলে জৈব সারে ভাগ্য বদল হালিমার

প্রকাশ | ৩১ মে ২০২৩, ০০:০০

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের রাবনা নয়াপাড়ার হালিমা কেঁচো সার বা জৈবসার উৎপাদন করে সফল হয়েছেন। বাড়িতে টিনের ঘর তুলে ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার বা জৈবসার উৎপাদন করে খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ০৪০ হাজার টাকা আয় করছেন তিনি। অর্জিত আয় থেকে তিনি সংসারের যাবতীয় খরচ মেটানোর পর ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করছেন। জানা গেছে, কৃষকের মেয়ে হালিমা বেগম বাল্যবিয়ের শিকার। গ্রামের স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় ২০০৩ সালে হালিমা বেগমের রাবনা নয়াপাড়ার মোয়াজ্জেম হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে দু'টি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। স্বামীর তেমন আয়- রোজগার না থাকায় সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকত। মেয়ে দু'টিকেও স্কুলে দিতে পারেননি। তিনি গরু লালন-পালন করে দুধ বিক্রির মাধ্যমে মেয়ে দু'টিকে স্থানীয় বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে ভর্তি করে দেন। পরে গৃহপালিত গরুর গোবরকে কাজে লাগিয়ে জাপানি কেঁচো কিনে কয়েকটি ছোট টিনের ঘর তুলে ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার বা জৈবসার উৎপাদন শুরু করেন। ২০০৮ সালে কেঁচো সার উৎপাদনের যাত্রা শুরু করলেও ২০১৫ সালে তিনি সফল হতে শুরু করেন। জৈবসার উৎপাদন করে বিক্রি করেন। সাড়াও পান আশানুরূপ। তার তৈরি জৈবসারের সুনাম আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে হালিমা বেগম নিজে জৈবসার উৎপাদন করছেন এবং অন্যকে উৎসাহিত করছেন। গৃহিণী, দুস্থ, বিধবা মহিলাদের কেঁচো সার উৎপাদনে উৎসাহিত করে 'নারী স্বপ্ন উন্নয়ন সংগঠন' নামে একটি সংগঠনও প্রতিষ্ঠা করেছেন। সফল উদ্যোক্তা হালিমা বেগম জানান, গৃহপালিত গরু লালন-পালন করে গোবরকে কাজে লাগানোর জন্য কেঁচো সার উৎপাদনে এগিয়ে আসেন। তার তৈরি জৈবসার রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হয়। ড্রাগন চাষি ও সবজি চাষিরা এই সার ব্যবহার করে থাকেন। খুচরা দাম ২৫ টাকা এবং পাইকারি প্রতি কেজি ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে এ সার। টাঙ্গাইলের কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন উপ-সহকারী পরিচালক লতিফা আক্তার জানান, হালিমা বেগম পরিশ্রম ও দক্ষতার গুণেই সফল উদ্যোক্তা হতে পেরেছেন। তার প্রকল্পে একাধিকবার যাওয়া হয়েছে। কেঁচো সার বা জৈব সার প্রয়োগে যে কোনো ফসলের ফলন ভালো হয়। ফসলে রোগবালাই কম হয়। মাটির গুণাগুণ বেড়ে যায়।