সুনামগঞ্জ ও আটঘরিয়ায় বেহাল সড়কে লাখো মানুষের ভোগান্তি

প্রকাশ | ৩১ মে ২০২৩, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুরে বেহাল নিয়ামতপুর-আনোয়ারপুর সড়ক -যাযাদি
সুনামগঞ্জের নিয়ামতপুর-আনোয়ারপুর ও পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান সড়ক দেবোত্তর-খিদিরপুর রাস্তা সংস্কারের অভাবে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। ওই দুই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে কয়েক লাখ মানুষকে প্রতিনিয়তই পড়তে হচ্ছে নানা ভোগান্তিতে। সড়ক দুটি দ্রম্নত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন পথচারীসহ স্থানীয়রা। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত ডেস্ক রিপোর্ট- সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, জেলার বিশ্বম্ভরপুর ফতেপুর বাজার থেকে তাহিরপুর উপজেলার আনোয়ার পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল দশার ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন চলাচলকারীরা। প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন পথচারীরা। স্থানীয়রা জানান, জেলা সদরের সঙ্গে ধর্মপাশা, তাহিরপুর ও মধ্যনগরসহ ভাটি অঞ্চলের যোগাযোগ পথ কমাতে বাইপাস যাতায়াত সড়ক হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন এ সড়কটি। নিয়ামতপুর-আনোয়ারপুর সড়কেই বেশি চলাচল করেন ভাটি অঞ্চলের বাসিন্দারা। লাখো মানুষের যোগাযোগ রক্ষাকারী গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির এখন বেহাল দশা। সড়কটি পরিণত হয়েছে এখন মরণফাঁদে। এ ছাড়া সদর উপজেলার গৌরারং, জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা বাজার ইউনিয়নসহ আশপাশের লোকজনও সহজে বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুরে যাতায়াত করেন এই সড়ক দিয়ে। সরেজমিন দেখা গেছে, দীর্ঘদিন সড়কের সংস্কার কাজ না হওয়ায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে পিচ-ঢালাই উঠে গেছে। এই মৌসুমে বৃষ্টিপাত হওয়ার ফলে রাস্তার সৃষ্টি হওয়া গর্তে কাঁদাপানিতে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ২০২২ সালের বন্যায় সড়কের বারোঙ্কা এলাকায় সড়ক ভেঙে নালার মতো সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বর্ষাকালে এখানে খেয়া নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হয়। বেশ কয়েকটি ব্রিজের গোড়া থেকে মাটি সরে গেছে। ফলে ব্রিজগুলোও রয়েছে হুমকির মুখে। অধিকাংশ ব্রিজের গোড়া থেকে মাটি সরে যাওয়ার ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। ২০২২ সালের বন্যার পর আর এই সড়কে কোনো কাজ হয়নি বললেই চলে। ফতেপুর ইউপির রঙ্গারচর গ্রামের ইসলাম উদ্দিন বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি দীর্ঘদিন মেরামত করা হয়নি। সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এমন ভাঙাচুরা রাস্তা দিয়েই সবসময় আমাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। গত বছরের ভয়াবহ বন্যার পর মেরামত করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এখন প্রতিদিনই বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ফলে এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। ফতেপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামেরই রোগী নিয়ে আনোয়ারপুর বাজার বা তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স যেতে হয়। রাস্তার এমন বেহাল অবস্থার কারণে রোগী নিয়ে তাহিরপুর যেতে খুব বেশি কষ্ট করতে হয়। এখানকার মানুষের এই ভোগান্তির কথা চিন্তা করে এই সড়কটি দ্রম্নত সংস্কার করার প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, নিয়ামতপুর-আনোয়ারপুর সড়কের জন্য ২৫ কোটি টাকার টেন্ডার হয়েছে। দরপত্র মূল্যায়নের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। দরপত্র মূল্যায়ন হয়ে আসলেই সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হবে। আটঘরিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি জানান, পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা সদরের সঙ্গে মাজপাড়া ও চাঁদভা ইউনিয়নের যোগাযোগের প্রধান সড়ক দেবোত্তর খিদিরপুর প্রায় ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে ভাঙা গর্ত ও খানাখন্দরে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। এ কারণে যানবাহন ও জন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে সড়কটি। এ যেন দেখার কেউ নেই। উলেস্নখ্য, এই সড়ক দিয়ে ওই দুই ইউনিয়নের শতাধিক যানবাহন ও লোকজন চলাচল করে থাকে। দেবোত্তর থেকে খিদিরপুর পর্যন্ত প্রায় গোটা রাস্তাই ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ রাস্তা দিয়ে সরকারি-বেসরকারি অনেক কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি অহরহ গাড়ি নিয়ে যাতাযাত করে থাকলেও নজরে পড়ছে না কারও। এ ছাড়া প্রতিদিন অজস্র সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মোটর সাইকেল, ভ্যানসহ মাঝেমধ্যে বাসও চলাচল করে থাকে। অন্যদিকে একাধিক স্কুল, কলেজের ছাত্রছাত্রীকে এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। বৃষ্টি হলে দুর্ভোগের সীমা থাকে না। রাস্তার প্রায় সর্বত্র ভাঙা ও গর্তের কারণে ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই আছে। অটোরিকশা চালক ইউনুস আলী জানান, খিদিরপুর থেকে দেবোত্তর পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার রাস্তা যেন মরণফাঁদ। অটোরিকশা নিয়ে যাতায়াতে গাড়ির চাকা বসে যায়, কোনো কোনো স্থানে উল্টে মানুষ আহত হয়। দীর্ঘদিন ধরে চলছে এ দুর্ভোগ।