রংপুরে পশুর চামড়ার বাজারে মন্দাভাব

প্রকাশ | ১৬ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

আবেদুল হাফিজ, রংপুর
রংপুরে পশুর চামড়া বাজারে ধস নামার উপক্রম হয়েছে। প্রান্তিক পযাের্য়র চামড়া ব্যবসায়ীরা হাট-বাজার ঘুরে ঘুরে চামড়া কিনলেও মহাজনরা তা নিতে অনিহা দেখাচ্ছেন। এতে করে বিপাকে পড়েছেন প্রান্তিক পযাের্য়র ব্যবসায়ীরা। গংগাচড়া উপজেলার ক্ষুদ্র চামড়া ব্যাবসায়ী মো. মশিউর রহমান জানান, স্বল্প পুঁুজ নিয়ে তিনি ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন স্থান থেকে গরু ও ছাগলের চামড়া কিনে থাকেন; পরে সামান্য কিছু লাভের আশায় সেগুলো নগরীর শাপলা চত্বর সংলগ্ন হাজীপাড়ার চামড়াপট্টির বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করেন। রংপুরে কিছুদিন থেকে বাজার মন্দা হওয়ায় স্থানীয় মহাজনরা চামড়া নিতে চাচ্ছেন না। ফলে চামড়া বিক্রি করতে না পেরে বাসায় ফেরত নিতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি। তিনি জানান, স্থানীয় মহাজনের কাছে লক্ষ্যাধিক টাকা পড়ে আছে। তার মতো একই অবস্থা অন্য চামড়া ব্যবসায়ীদেরও। স্থানীয় মহাজনদের অভিযোগ ট্রানারি মালিকরা চামড়া নিতে চাচ্ছেন না। জানা গেছে, ঢাকার ট্যানারিগুলো চামড়া ক্রয় করা কমিয়ে দিয়েছে। এতে করে মফস্বল শহরে প্রান্তিক পযার্য় চামড়া কেনাবেচায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সূত্র মতে, রংপুরের অন্যতম চামড়ার হাট পলাশবাড়ি এবং তারাগঞ্জ হাটে কেনাবেচা হ্রাস পেয়েছে। ফলে চামড়াপট্টির ব্যবসায়ীরাও চামড়া কেনা কমিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। চাহিদা না থাকায় কমদামেও চামড়া বিক্রি করতে পারছেন না তারা। চামড়ার স্থানীয় মহাজন মতিউর রহমান জানান, দীঘর্ ৩০ বছর ধরে তিনি চামড়ার ব্যবসা করছেন। কিন্তু এতো খারাপ অবস্থা আগে কখনো দেখেননি। তারা ঢাকার পোস্তায় অবস্থিত চামড়ার আড়তে সরাসরি চামড়া সরবরাহ করে থাকেন। কিন্তু গত এক বছর ধরে ব্যবসায় মন্দাভাব চলছে। তবে শবেবরাতের পর থেকে এ সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। আন্তজাির্তক বাজার আমেরিকা এবং চীনে চামড়া রপ্তানীতে নতুন করে শুল্ক আরোপের ফলে দেশের চামড়ার বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তিনি বলেন, ট্যানারি মালিকরা চামড়া কেনা শুরু না করলে বাজারের এই মন্দাভাব দূর হবে না। এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে কোরবানি ঈদের চামড়া অবিক্রীত থাকার আশঙ্কা রয়েছে। খেঁাজ নিয়ে জানা গেছে, চামড়ার কেনাবেচা কমে যাওয়ায় এরই মধ্যে চাকরি হারিয়েছেন অনেক কমর্চারী। আগে যেখানে প্রতি দোকানে ১০ থেকে ১২ জন কমর্চারী থাকতো এখন সেখানে ২ জন করে আছেন। এ বিষয়টি স্বীকার করেছেন স্থানীয় মহাজনরা। চামড়াপট্টি ঘুরে দেখা গেছে, চামড়া ব্যবসায়ীর সংখ্যা দিন দিন কমছে। বতর্মানে যারা সারাবছর চামড়া ব্যবসার সঙ্গে সক্রিয় এমন ব্যবসায়ীর সংখ্যা মাত্র ১০ জন। তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এ গ্রেডের গরুর চামড়া স্কয়ার ফিট বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় এবং বি গ্রেডের চামড়া বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। শবেবরাতের আগে সেটি বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা এবং ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। খাসির চামড়া বিক্রি হচ্ছে (৫ থেকে ৭ ফিট দৈঘ্যের্র) চামড়া স্কয়ার ফিট বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা দরে। অথচ শবেবরাতের আগে বিক্রি হয়েছিল ৩০ টাকা দরে। তবে ৫ ফুটের চেয়ে কম দৈঘের্্যর একেকটি চামড়া বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে। তবে গত ৪ দিন ধরে চামড়ার বাজার আবার নেমে গেছে। বতর্মানে এ গ্রেড গরুর চামড়া প্রতি বগর্ফুট বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩২ টাকায়। তিনি বলেন, গরুর চামড়া সবোর্চ্ছ ৪০ ফুট এবং নি¤েœ ২০ ফুট পযর্ন্ত হয়ে থাকে।