শেরপুরে বিলীনের পথে মৃৎশিল্প

প্রকাশ | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

রাশেদুল হক, শেরপুর
শেরপুরে মাটির স্যানিটারি ল্যাট্রিনের চাক তৈরি করছেন এক মৃৎশিল্প Ñযাযাদি
বৈজ্ঞানিক জয়যাত্রা ও নানাবিধ আবিষ্কারের কারণে কালের আবতের্ বিলীনের পথে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প। তারপরও পূবর্পুরুষের ঐতিহ্যের এই পেশা এখনো ধরে রেখেছেন কেউ কেউ। মাটির সঙ্গে মানুষের জীবন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। মাটিকে সবাই পায়ের নিচে রাখতেই অভ্যস্ত। কিন্তু এই মাটিই যখন উঠে আসে আমাদের ঘরে, সাজিয়ে তোলে অন্দরমহল, তখন মাটির স্থান হয় অভিজাত্যে। মৃৎশিল্প এমন একটি মাধ্যম যা মাটিকে নিয়ে আসে মানুষের কাছাকাছি। মৃৎশিল্প বলতে মাটি দিয়ে তৈরি যাবতীয় ব্যবহাযর্ এবং শৌখিন শিল্পসামগ্রীকেই বোঝায়। শিল্প ও সংস্কৃতির বিভিন্ন মাধ্যমের মধ্যে মৃৎশিল্প অতি প্রাচীন। নগরায়নের ফলে কালের আবতের্ন বগুড়ার শেরপুরে অতি প্রাচীন এই শিল্প এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। মাটির তৈরি হঁাড়ি, পাতিল, ফুলের টব, মাটির ব্যাংক, আগরদানি, মোমদানি, প্রদিপ দানিসহ আরও অনেক ধরনের তৈজসপত্র দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়ে থাকলেও ব্যবহাযর্ এ সব বস্তুর বতর্মানে চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে এ শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন মৃৎশিল্পীরা। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের অসঙ্গতি আর জীবন-মান উন্নয়নের জন্য ক্রমশ অন্য পেশার দিকে ঝঁুকে পরছেন তারা। শেরপুর উপজেলার মিজার্পুর ইউনিয়নের কাশিয়াবালা পালপাড়ায় সুশীল পাল (৬৫) বলেন, বাপ-দাদার জাত ব্যবসা ধরে রাখার জন্য আমি ৩১ বছর এ পেশায় কাজ করছি, কিন্তু আমার চার ছেলের কেউই এ পেশায় নেই। তাদের মধ্যে কেউ চাকরি কেউ পড়াশোনা করছে। আমার পরে আমার পরিবারের আর কেউ এই পেশায় থাকবে না। দিনে দিনে মাটির তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদাও কমছে, বতর্মানে স্যানিটারি ল্যাট্রিনের চাক বা রিং বা কুয়ার রিং তৈরি করছি। এটার স্থায়িত্ব সিমেন্টের তৈরী রিংয়ের তুলনায় অনেক বেশি, শত বছরের তৈরী রিং এখনও অখ্যত অবসস্থায় দেখা যায়। শেরপুর উপজেলা নিবাির্হ কমর্কতার্ লিয়াকত আলী সেখ বলেন, বতর্মান জনবান্ধব সরকার মৃৎশিল্পীদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, সমাজসেবা অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন অধিদপ্তরের মাধ্যমে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া ও ঋণদান কমর্সূচিসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।