ভয়ঙ্কর সেই জনপদ এখন নিরাপদ!

প্রকাশ | ১৬ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

মজনুর রহমান আকাশ, গাংনী
গাংনীর চোখতোলা মাঠ দিয়ে পথ চলতে কেউ আর ভয় পান না। সেটা ভর দুপুর কিংবা গভীর রাত যখনই হোক। এক সময়কার ভয়ংকর ও আতঙ্কের জনপদ এখন সবার জন্য নিরাপদ। দিনে ও রাতে প্রশাসনের টহল ও স্থানীয় লোকজনের নজরদারীতে ছিনতাইকারী ও ডাকাতদল আর হানা দিতে পারে না পথচারীদের উপর। সরেজমিনে দেখা গেছে, গাংনীর চেংগাড়া-কাষ্টদহ, ভোমরদহ ও জোড়পুকুর গ্রামের মধ্যখানে এ মাঠের অবস্থান। মাঝখান দিয়ে গেছে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া মহাসড়ক। এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামের দূরত্ব প্রায় ৪ কিলোমিটার। বিশাল মাঠ ও জনশূন্য থাকায় ভর দুপুরেও পথচারীদের কাছ থেকে টাকা পয়সা লুট করে নিতো ডাকাত ও ছিনতাইকারীরা। সন্ধ্যার পর থেকে আরও ভয়ংকর হয়ে উঠত এ বিশাল মাঠটি। সন্ধ্যা রাতেও ডাকাতির ঘটনা ঘটত। এমনকি পুলিশের গাড়িতে হামলা করতে পিছু পা হতো না ডাকাতরা। অস্ত্রধারী ডাকাতদের কাছে প্রশাসনও ছিল অসহায়। জোড়পুকুর গ্রামের বাসিন্দা ইউপি মেম্বর শাহাবুল জানান, বছরখানেক আগেও দুষ্কৃতকারীদের ভয়ে লোকজন মাঠে নামতে পারত না। দলবদ্ধ হয়ে আবাদ করতে যেত। সুযোগ পেলেই ডাকাত ছিনতাইকারীরা লোকজনকে জিম্মি করে সব লুট করে নিতো। আর দোষ পড়তো চোখতোলা মাঠের আশে পাশের গ্রামের মানুষের ওপর। পুলিশ প্রশাসনও গ্রামের লোকজনকে সন্দেহ করে ধরে আনতো। বিষয়টি ভেবে স্থানীয় লোকজন উদ্যোগ নিয়ে নজরদারী শুরু করে। রাস্তার পাশে পুকুর খনন করে মাছ চাষ ছাড়াও পথচারী হিসেবে রাস্তায় টহল দেয়া শুরু করেন। ফলে কিছুটা হলেও জনগণ স্বস্তি পান। তবে রাত ৮টার পর আর কেউ পথ চলতে সাহস করেনি। বিষয়টি জানতে পেরে গাংনী থানার তৎকালীন ওসি আকরাম হোসেন উদ্যোগ নিয়ে পুলিশী টহল বাড়িয়ে দেন এবং সারা রাত পাহারা শুরু করেন। একটি টীম চোখ তোলা মাঠের যাত্রী ছাউনিতে অবস্থান করেন অন্য টীম মুন্দা চেক পোস্টে পাহারা বসান। বেশ কজন ডাকাত আটক ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় পিছু হটে ডাকাত ছিনতাইকারী ও দুষ্কৃতকারীরা। শুরু হয় জনগণের স্বাভাবিক পথচলা। গাংনী থানার ওসি (তদন্ত) সাজেদুল হক বলেন, একসময় এ মাঠ সবার জন্যই আতঙ্কের ছিল। স্থানীয় লোকজন ও পুলিশী অপারেশনের ফলে বেশ কিছু দুষ্কৃৃতকারী ধরা পড়ে। তা ছাড়া অস্থায়ী চেক পোস্ট বসিয়ে পাহারা করা হয়। ফলে ডাকাত ছিনতাইকারীরা কোনো সুযোগ পায় না কারো অনিষ্ট করার। এখন চোখ তোলা মাঠটি সবার জন্য নিরাপদ।