হত্যার ঘটনায় যৌনপলস্নীতে আতঙ্ক

প্রকাশ | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

কুদ্দুস আলম, গোয়ালন্দ
দেশের সর্ববৃহৎ যৌনপলস্নী রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় একের পর এক তরুণীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় পলস্নী জুড়ে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। জীবনের সকল সাধ ও স্বপ্ন বিসর্জন দেয়া এখানকার কয়েক হাজার যৌনকর্মীর জীবন ও সম্পদ বর্তমানে চরমভাবে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। কমে গেছে তাদের আয়-রোজগার। অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত কয়েক দিনের মধ্যে এ যৌনপলস্নীতে ঘাতকরা দুই তরুণীকে গলা কেটে হত্যা করে এবং একজনকে গুরুতর জখম করে। সে হাসপাতালে এখনো মৃতু্যর সাথে লড়ছে। পুলিশ এ সকল ঘটনায় তিন ঘাতককে গ্রেপ্তার করেছে। তরুণীদের হত্যা করে তাদের ঘরে থাকা মূল্যবান সম্পদ ও নগদ টাকা হাতিয়ে নেয়া এ সকল হত্যার কারণ বলে ঘাতকরা জানিয়েছে। তবে এর পিছনে আরো কোনো কারণ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছে পলস্নীর অনেকেই। এছাড়াও গত দেড় বছরে এ পলস্নীতে অন্তত ২০ জন যৌনকর্মীসহ ২৫ জনের অস্বাভাবিক মৃতু্য হয়েছে। থানা পুলিশ জানায়, সর্বশেষ গত ১৪ ফেব্রম্নয়ারি বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে কল্পনা বাড়িওয়ালীর বাড়ির ভাড়াটিয়া শাহনাজ পারভীন স্বপ্না ওরফে শশী (২৮) নামের এক তরুণীকে গলা কেটে হত্যা করে এক ঘাতক। এ সময় হাতেনাতে রনি মোলস্না নামের (২২) ওই ঘাতককে ধারালো রক্তাক্ত ছুরিসহ আটক করে স্থানীয়রা। সে মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার গালা ইউনিয়নের কৌড়ি গ্রামের সোহরাব মোলস্নার ছেলে। ঘাতক রনি তার এক বন্ধুর পরামর্শে যৌনকর্মী শশীর নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে শশীকে হত্যা করেছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। দৌলতদিয়া যৌনপলস্নীর বাসিন্দা ঝর্ণা বেগম, আনু বেগম, সেলিনা খাতুনসহ অনেকেই জানান, সম্প্রতি একই কায়দায় যৌনকর্মীদের গলা কেটে হত্যা ও হত্যাচেষ্টায় পলস্নীর বাসিন্দাদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতারিত হয়ে জীবনের সবকিছু হারিয়ে এই অন্ধকার জীবন বেছে নেয়া মানুষগুলোকে এভাবে হত্যার বিষয়টি এখানে নতুন করে উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করেছে। রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি (পিপিএম) বলেন, বৃহদাকার ওই গোটা পলস্নীটাই একটা অপরাধের স্বর্গরাজ্য। সেখানে চারদিক দিয়েই অবাধে লোকজন ভিতরে যাওয়া-আসা করতে পারে। নেই কোনো নিরাপত্তা প্রাচীর। তারপরও যে প্রবেশপথগুলো রয়েছে সেখান দিয়ে খদ্দেরদের দেহ তলস্নাশি করে ভিতরে প্রবেশের ব্যাপারে পাহারাদারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।