হরিণাকুন্ডুতে জাল সনদ দিয়ে চাকরি করেন শিক্ষকরা

প্রকাশ | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

ঝিনাইদহ ও হরিণাকুন্ডু প্রতিনিধি
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে এইচএসসি পাশ কেরানি দিয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান করানোর প্রতিবাদে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মানববন্ধন -যাযাদি
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে এইচএসসি পাস কেরানি দিয়ে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার রিশখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর উজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। রোববার ওই বিদ্যালয়ের সামনে সড়কের ওপর ঘণ্টাব্যাপী এক মানববন্ধনে এই অভিযোগ করেন তারা। এ সময় জাল সনদে ও নীতিমালা বহির্ভূতভাবে কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে চাকরি করার অভিযোগ এনে তাদের অপসারণ ও ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের নামে টিআর সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগও করা হয়। মানববন্ধনে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবক, শিক্ষার্থী, জনপ্রতিনিধিসহ নানা শ্রেণি ও পেশার মানুষ অংশ নেয়। জাকিয়া সুলতানা নামে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, তাদের বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক নিয়মিত ক্লাসে পাঠদান করান না। কেরানি দিয়ে তাদের পাঠদান করানো হয়। এতে তাদের পড়ালেখার ক্ষতি হচ্ছে। জাফর ইকবাল নামে এক অভিভাবক দাবি করেন, প্রতিষ্ঠানটির ৩ জন শিক্ষক স্থানীয় সামাজিক রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে আবুল কালাম আজাদ ও মরিয়ম নেসা নামে ২ জনের নিয়োগ অবৈধ। তারা নীতিমালা বহির্ভূত ও জাল সনদে বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে শিক্ষকতা করছেন। শহিদুল ইসলাম নামে আরও এক অভিভাবক দাবি করেন, আবুল হাসান, আবুল কালাম আজাদ ও মরিয়ম নেসা নামে তিন শিক্ষক বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি। গত ২ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচন হয়। নির্বাচনে অভিভাবকদের ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ প্যানেলকে সমর্থন না দিয়ে অবৈধভাবে অর্থনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে তারা ভোটদানে বিরত থাকেন। এর আগেও একই কারণে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। ফলে নিয়মিত ম্যানেজিং কমিটি না থাকার কারণে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ দাবি করেন, বিদ্যালয়টিতে দীর্ঘ বছর ধরে ৩জন শিক্ষক চাকরি করছেন। তাদের দুইজন জাল সনদে এবং একজন নীতিমালা বহির্ভূতভাবে নিয়োগ পেয়েছেন। এ বিষয়ে অফিস সহকারী উজ্জল হোসেন ক্লাস নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে আমি নিয়মিত ৬ষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান ও ৭ম শ্রেণির গণিতের ক্লাস নিই। সহকারী শিক্ষক ও টিআর প্রতিনিধি আবুল কালাম আজাদ নীতিমালা বহির্ভূতভাবে চাকরি করার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি বৈধভাবে দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে চাকরি করছেন। প্রধান শিক্ষক জীবন কুমার দে বলেন, যখন ওই শিক্ষকদের নিয়োগ হয় তখন আমি প্রধান শিক্ষক ছিলাম না। তাই তাদের নিয়োগ বৈধ কিনা আমি সেটা বলতে পারছি না। তবে মাঝে মাঝে কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত না হলে কেরানি দিয়ে পাঠদান করানো হয়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল বারী বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।