সরকার নির্ধারিত মূল্যে কোনো কাঁচামাল নেই হরিরামপুরে

প্রকাশ | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
সিন্ডিকেটের হাত থেকে ভোক্তাদের পকেট কাটা রোধ করতে, সরকার বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। তবে বাজার মনিটরিংয়ের অভাবে সেই সুফল পাচ্ছে না মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ভোক্তারা। এ মাসের ১৪ তারিখে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মধ্যে সর্বোচ্চ খুচরা পর্যায়ে আলু প্রতি কেজি ৩৫-৩৬ টাকা, দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৬৪-৬৫ টাকা ও ডিম প্রতি পিচ সর্বোচ্চ খুচরা পর্যায়ে ১২ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। তার এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও জেলার হরিরামপুর উপজেলার কোনো বাজারেই এই দাম মানা হচ্ছে না। বরং আলু প্রতি কেজি ৫০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৭৫ টাকা ও প্রতি পিস ফার্মের ডিম সাদা ১২ টাকা ও লাল ডিম ১৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ভোক্তারা। তাদের দাবি সরকার নির্ধারিত মূল্যে পণ্যগুলো বিক্রি করতে প্রশাসনের নজরদারি বাড়াতে। সরেজমিন গেলে বৃহস্পতিবার দুপুরে, লেছড়াগঞ্জ বাজারে কাঁচামালের দোকানে কথা হয় আরিফ নামের এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি জানান, 'সরকার নির্ধারিত মূল্যের বেশি দামে আমাদের আলু-পেঁয়াজসহ বিভিন্ন কাঁচামাল কিনতে হচ্ছে। খেতে হবে, তাই বেশি দাম হলেও কিনতে বাধ্য হচ্ছি। এগুলো দেখবে প্রশাসন। কই তাদের কোনো ভূমিকা দেখছি না। যদি তারা বাজার মনিটরিং করত, তাহলে দাম বেশি নেওয়ার সুযোগ নেই।' ঝিটকা বাজারের আরেক ক্রেতা মোস্তাফিজ জানান, প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই সরকারি মূল্যে কাঁচামাল বিক্রি হচ্ছে না। তারা নজরদারি বাড়ালেই হরিরামপুরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকত। লেছড়াগঞ্জ বাজারের কাঁচামাল বিক্রেতা মুকুল জানান, 'আমরা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে কাঁচামাল কিনেছি বলেই, বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। বৃহস্পতিবার জায়গীর আড়তে নুর ইসলামের কাছ থেকে ৪১ টাকা ৫০ পয়সা কেজি দরে পাইকারি আলু কিনেছি। সেখানেই প্রশাসনের নজরদারি নেই। তাহলে আমরা কীভাবে কমে বিক্রি করব বলেন। এছাড়া বেশি দামে কাঁচামাল কিনলেও আড়তদাররা রশিদও দিচ্ছেন না।' ঝিটকার দুই আলুর আড়তদার মো. শাজাহান জানান, 'আমার দোকানে ঠাকুরগাঁওয়ের মোকাম থেকে গত সপ্তাহে আগের দামে আলু কেনা। তাই বেশি দামে বিক্রি করছি। আলুর দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতা কম। আগের মোকামের আলুগুলো বিক্রি শেষ হয়নি। তাই বর্তমান মূল্যের আলু কিনতে পারছি না।' সোনামুদ্দিন বেপারী ট্রেডার্সে গিয়ে দেখা যায়, তার দোকানে কোনো আলু নেই। এ ব্যাপারে তার দোকান থেকে মো. মিলন জানান, মোকামে আলুর দাম ৪১ টাকা কেজি। তারপরও তারা আলু কিনলে কোনো রশিদ দিচ্ছেন না। এজন্য আলু বিক্রি আপাতত বন্ধ রেখেছেন। হরিরামপুর ইউএনও শাহরিয়ার রহমান বলেন, 'সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে আমরা ভোক্তা অধিকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের মনিটরিং অব্যাহত আছে।' জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল বলেন, 'আমাদের রেগুলার মনিটরিং চলছে। আমাদের এলাকায় আলুগুলো আসে উত্তরবঙ্গ থেকে। কোল্ডস্টোরেজ থেকে সরকারের যে নির্ধারিত দাম, সেটা মানছে না তারা। এ জন্য খুচরা বাজারে এখনো দাম কমেনি। তবে আশা করছি দু-এক দিনের মধ্যে দামটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।'