চারঘাটে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ
প্রকাশ | ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০
চারঘাট (রাজশাহী) প্রতিনিধি
রাজশাহীর চারঘাটে আশঙ্কাজনকভাবে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। জেলায় চারঘাট উপজেলাকে ডেঞ্জার জোন হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। বর্তমানে চারঘাট হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছেন ২৪ জন রোগী। তাদের মধ্যে উপজেলা সদর ইউনিয়ন, ভায়ালক্ষ্ণীপুর ইউনিয়ন ও পৌরসভার রোগীর সংখ্যা বেশি। ফলে চরম হতাশা ও উদ্বিগ্নের মধ্যে রয়েছেন উপজেলাবাসী।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের দেওয়া তথ্য মতে, উপজেলা হাসপাতাল ও বেসরকারি হাসপাতাল মিলে এ পর্যন্ত প্রায় ৮০০ রোগীর ডেঙ্গু টেস্ট করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় শতাধিক রোগী এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন এবং তিনজন এই রোগে মারা গেছেন। স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আতিকুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আটজন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন এবং প্রায় ২৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সরেজমিন গিয়ে ভর্তি রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিনই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী আসছেন। হাসপাতালে স্যালাইন না পাওয়ায় বাইরে থেকে অধিক মূল্যে কিনতে হচ্ছে। এতে গরিব রোগীরা পড়েছেন চরম বেকায়দায়। পর্যাপ্ত কিট না থাকায় ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য রোগীরা বেসরকারি হাসপাতালে যাচ্ছেন, ফলে সরকার নির্ধারিত ফি'র চেয়ে বেশি দিয়ে টেস্ট করতে হচ্ছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি বাকড়াঁ রায়পুর এলাকার মোতলেব বলেন, গত রোববার জ্বর নিয়ে হাসপাতালে আসলে ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য বাইরের ক্লিনিকে পাঠানো হয়। পরে ৫০০ টাকায় ডেঙ্গু পরীক্ষা করলে এই রোগ শনাক্ত হলে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
রোগীর মেয়ে রিনা বেগম জানান, হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও পাওয়া যাচ্ছে না কোনো স্যালাইন। বাধ্য হয়ে বাইরে একটি স্যালাইন ৩০০ টাকা দিয়ে কিনে আনতে হচ্ছে। এতে চিকিৎসা খরচ মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনা বৃদ্ধি, বাড়ির আশপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, জমে থাকা পানিতে বিস্নচিং পাউডার ও মশক নিধনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশিকুর রহমান।
এদিকে চারঘাটে ডেঙ্গু রোগী বৃদ্ধির খবরে ছুটে আসেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক। সোমবার সকালে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে ডেঙ্গু রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। রোগীদের বিভিন্ন ধরনের ডেঙ্গু প্রতিরোধ বিষয়ে পরামর্শও দেন।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, জেলায় চারঘাট-বাঘা ও পুঠিয়া ডেঞ্জার জোন হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এসব এলাকায় আশঙ্কাজনকভাবে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। অধিক চাপ সামলাতে হাসপাতালে টেস্ট কিট ও স্যালাইন সরবরাহ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।