ভাতিজাকে হত্যার পর মুক্তিপণ দাবি, জিডি করে আটক চাচা!
প্রকাশ | ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
গাজীপুরের শ্রীপুরে রামিমুল হাসান বিজয় নামে এক স্কুলছাত্রকে হত্যার পর ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির নাটক সাজানোর ঘটনা ঘটেছে। থানায় অপহরণের জিডি করে নিহত ওই শিশুর এক চাচা আটক হয়েছেন। পরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার ও আটকদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে জঙ্গল থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহত রামিমুল হাসানের চাচাসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের সন্দেহ, আপন বড় ভাইয়ের ছেলেকে হত্যার পর থানায় গিয়ে জিডি করেছিলেন চাচা জুয়েল বেপারী।
ঘটনার পাঁচ দিন পর গত রোববার বিকালে উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের কর্ণপুর জঙ্গলের ভেতর থেকে ওই কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয় বলে যায়যায়দিনকে নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম।
এর আগে, গত ২৬ সেপ্টেম্বর শ্রীপুর পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের চন্নাপাড়া গ্রাম থেকে নিখোঁজ হয় বিজয়। সে শ্রীপুর পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের চন্নাপাড়া গ্রামের রোমান বেপারীর ছেলে এবং স্থানীয় শতদল কিন্ডার গার্টেনে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করত।
আটকরা হলেন- নিহত বিজয়ের চাচা গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া চন্নাপাড়া গ্রামের মৃত নূর হোসেন বেপারীর ছেলে জুয়েল বেপারী (৩০), একই গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে জিহাদ (১৭) ও ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানার ধলিয়া গ্রামের মজনু মিয়ার ছেলে শামীম (২৪)।
নিহতের পরিবার, পুলিশ ও থানায় করা জিডির তথ্য মতে, 'গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিকাল ৩টার দিকে বাড়ির পাশ থেকে অজ্ঞাতনামা অপহরণকারীরা তুলে নিয়ে যায় বিজয়কে। এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে বিজয়ের চাচা। অপহরণের এক দিন পর ২৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১০-১০ মিনিটে বিজয়ের বাবার মুঠোফোনে কল করে অপর প্রান্ত থেকে একটি পুরুষ কণ্ঠে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। কণ্ঠটি একটু বয়স্ক ব্যক্তির মনে হয়েছে। পরে জিডির পর বিজয়ের চাচা জুয়েল বেপারীকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ মরদেহের সন্ধান পায়। নিহতের বাবা বলেন, 'মুক্তিপণের ১০ লাখ টাকা নিয়ে নেত্রকোনা জেলার সুষম দুর্গাপুর নিয়ে যেতে বলে মোবাইল বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে কোনো যোগাযোগ করেনি। আজকে আমার ছেলের লাশ পেলাম।'
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ওসি এ এফ এম নাসিম যায়যায়দিনকে বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত তিনজনকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে হত্যাকান্ডের মূল রহস্য বের করতে কাজ করছে পুলিশ।