স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদÐ

প্রকাশ | ১৮ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

চঁাদপুর প্রতিনিধি
চঁাদপুরের কচুয়া উপজেলার সাদীপুরা গ্রামে যৌতুকের দাবিতে শ^াসরোধ করে গৃহবধূ শাহিনুর বেগমকে (২০) হত্যার অপরাধে স্বামী এরশাদ উল্যাহকে মৃত্যুদÐ ও চাচাশ^শুর আবু তাহের মুন্সীকে যাবজ্জীবন কারাদÐ প্রদান করেছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে চঁাদপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. জুলফিকার আলী খঁান এই রায় দেন। হত্যার শিকার শাহিনুর বেগম একই উপজেলার পাশ^বতীর্ গ্রামের শহীদুল্লাহ মিয়াজীর কন্যা। মৃত্যুদÐপ্রাপ্ত এরশাদ উল্যাহ সাদীপুরা গ্রামের মুন্সী বাড়ির রুহুল আমিনের ছেলে এবং যাবজ্জীবন কারাদÐপ্রাপ্ত আবু তাহের মুন্সী একই বাড়ির আব্দুল খালেক মুন্সীর ছেলে। মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৬ জানুয়ারি এরশাদ উল্যাহর সঙ্গে শাহিনুর বেগমের বিবাহ হয়। ওই সময় ছেলেকে কনের পিতা আড়াই লাখ টাকা যৌতুক দেন। কিন্তু আরও যৌতুকের দাবিতে এরশাদ উল্যাহ নিজ বাড়িতে পরিবারের লোকজনসহ শাহীনুরকে শারীরিক ও মানসিক নিযার্তন করেন। ঘটনার দিন ২০১৫ সালের ২৮ ফেব্রæয়ারি দুপুরে এরশাদ উল্যাহ ও শাহিনুর বেগমের মধ্যে যৌতুক নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ হয়। এ সময় এরশাদ উল্যাহ তার চাচা আবু তাহের মুন্সীর সহযোগিতায় শাহিনুরকে মারধর করে এবং শ^াসরোধ করে হত্যা করে। শাহিনুরের পিতা শহীদুল্লাহ মিয়াজী জানান, ঘটনার পর চাচা আবু তাহের তাকে মেয়ে অসুস্থ বলে সংবাদ দেন। কিন্তু তারা এসে শাহিনুরকে এরশাদ উল্যাহর বসতঘরের বারান্দায় ছাদর দিয়ে ঢাকা অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় আবু তাহের ও এরশাদ উল্যাহ বলেন শাহীনুর আত্মহত্যা করেছে এবং কোনো মামলা করার প্রয়োজন নেই বলে চাপ প্রয়োগ করেন। এরপরে শহীদুল্লাহর বিষয়টি সন্দেহ হলে কচুয়া থানা পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করেন। এই ঘটনায় ১ মাচর্ ২০১৫ তারিখে শাহিনুরের পিতা শহীদুল্লাহ কচুয়া থানায় এরশাদ উল্যাহ ও আবু তাহের মুন্সীকে আসামি করে ৩০২/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তাদের আটক করে আদালতে প্রেরণ করে। সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আমান উল্যাহ জানান, মামলার তদন্তকারী কমর্কতার্ কচুয়া থানার তৎকালীন সময়ের উপ-পরিদশর্ক (এসআই) মোস্তফা চৌধুরী একই বছরের ১০ ডিসেম্বর আদালতে চাজির্শট দাখিল করেন। প্রায় ৩ বছর মামলাটি চলমান অবস্থায় আদালত ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। সাক্ষ্য-প্রমাণ ও নথি পযাের্লাচনা করে বিচারক আসামিদের উপস্থিতিতে শাহিনুরের স্বামী এরশাদ উল্যাহকে মৃত্যুদÐ এবং চাচা আবু তাহের মুন্সীকে যাবজ্জীবন কারাদÐ প্রদান করেন। সরকার পক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ছিলেন মোক্তার আহম্মেদ এবং আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন সেলিম আকবর।