জয়পুরহাটে ডায়রিয়ার প্রকোপ হাসপাতালে রোগীর চাপ

স্থান সংকুলান না হওয়ায় রোগীদের চিকিৎসা চলছে মেঝে ও করিডোরে

প্রকাশ | ১৮ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
জয়পুরহাটে হঠাৎ করে বেড়ে গেছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে ভতির্ হয়েছে প্রায় ১০০ রোগী। গত এক সপ্তাহ থেকে হাসপাতালের আট শয্যার ওয়াডের্ গড়ে প্রতিদিন চিকিৎসা নিচ্ছেন প্রায় ৭০ রোগী। স্থান সংকুলান না হওয়ায় তাদের চিকিৎসা চলছে ওয়াডের্র মেঝে ও হাসপাতাল করিডোরে। রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় চিকিৎসা দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কতৃর্পক্ষ। খেঁাজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ থেকে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়াডের্ প্রতিদিন রোগী ভতির্ ৬০ জনেরও বেশি। রোববার রাত ও সোমবার ভোরের দিকে হঠাৎ করে এই সংখ্যা বেড়ে ১০০ ছাড়িয়ে যায়। যাদের দ্রæত চিকিৎসা দেয়ার পর অনেকেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরে। গ্রামের পাশাপাশি জয়পুরহাট পৌর এলাকা থেকেও ডায়রিয়ার অনেক রোগী আসছেন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে। গরম আবহাওয়া এবং আম-কঁাঠালের মৌসুমের কারণে পানিবাহিত এই রোগের প্রকোপ বাড়ছে বলে ধারণা করছেন হাসপাতাল কতৃর্পক্ষ। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়াডের্ পা ফেলানোর জায়গা নেই। আট শয্যার ওয়াডের্ রোগীদের মেঝে ও দুই পাশের করিডোরের মেঝেতে শুয়ে আছেন অনেক রোগী। প্রত্যেকের মাথার ওপর স্যালাইন ঝুলতে দেখা গেছে। এ সময় কথা হয় জয়পুরহাট শহরের সবুজনগর মহল্লার ডায়রিয়া রোগী আবদুস সালামের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রচÐ গরমের কারণেই তার ডায়রিয়া হয়েছে। শুক্রবার রাতে ভতির্ হলেও ওয়াডের্র মেঝেতে শুয়ে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। রাত থেকেই স্যালাইন চলছে। জয়পুরহাট সদর উপজেলার দোগাছি গ্রাম থেকে পঁাচ বছরের শিশু তাপসকে নিয়ে তার মা শুক্রবার রাতে এসেছেন হাসপাতালে। তাপসকে মুখে স্যালাইন খাওয়ানো হচ্ছে রাত থেকেই। বাবা সঞ্জিত কুমার জানান, শুক্রবার দুপুরে কঁাঠাল খাওয়ার পর সন্ধ্যা থেকে তার ছেলে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। একই এলাকার আজেদা বেগম ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গত চারদিন ধরে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ না হতেই অন্য মেয়ে মেহেরুন্নেছা আক্রান্ত হওয়ায় শনিবার তাকেও হাসপাতালে ভতির্ করা হয়েছে। কি কারণে তারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন, তা তারা বলতে পারেননি। তবে তাদের ধারণা, কয়েকদিন থেকে প্রচÐ গরমের কারণেই তারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়াডের্র ইনচাজর্ লায়লা আরজুমান্দ বানু বলেন, তাদের ওয়াডের্ শয্যা সংখ্যা মাত্র আটটি। অথচ গত সাতদিন থেকে প্রতিদিন গড়ে ৬০ এরও অধিক রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। দিন দিন রোগীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তুলশী চন্দ্র রায় বলেন, গত সাত দিনের তুলনায় মঙ্গলবার রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। পুরো ওয়াডর্জুড়ে রোগীদের চিকিৎসা চলছে। গরম আবহাওয়ায় আম-কঁাঠাল খেয়েই অধিকাংশ রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এ ছাড়া পানির সমস্যা থেকেও এই রোগ ছড়াতে পারে। জয়পুরহাট জেলা সিভিল সাজর্ন ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার বলেন, জেলা আধুনিক হাসপাতালে হঠাৎ করে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়লেও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে এই সংখ্যা স্বাভাবিক রয়েছে।