নওগঁায় বিধবা ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ!

প্রকাশ | ১৯ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

নওগঁা প্রতিনিধি
নওগঁা সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারের বিরুদ্ধে কৌশলে বিধবা ভাতার কাডর্ নিয়ে টাকা তুলে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী বিধবা সম্পা বানু নওগঁা সদর উপজেলা নিবার্হী কমর্কতার্ (ইউএনও) বরাবর বুধবার দুপুরে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। এ সময় ওই এলাকার প্রায় শতাধিক নারীপুরুষ উপস্থিত ছিলেন। ভুক্তভোগী বিধবা সম্পা বানু বক্তারপুর ইউনিয়নের দীঘা গ্রামের মৃত মোতালেব হোসেন ওরফে বাবুর স্ত্রী এবং অভিযুক্ত একই ইউনিয়নের ৬নং ওয়াডর্ মেম্বার ছানা উল্লাহ (ছানা)। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ০১/০৭/২০০৯ ইং তারিখে উপজেলা সমাজসেবায় বিধবা ভাতার আওতাভুক্ত হন সম্পা বানু। রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক পাহাড়পুর শাখায় একটি হিসাব নম্বর খোলা হয়। বিধবা ভাতার আওতাভুক্ত হওয়ার পর থেকে তিনি ২০১৭ সালের ফেব্রæয়ারি পযর্ন্ত তার হিসাব নম্বর থেকে প্রতি মাসে ৫০০ টাকা টাকা করে উত্তোলন করেছেন। কিন্তু গত ২০১৭ সালের মাচর্ মাসে কাডের্ কিছু ভুল আছে এবং সেটি সংশোধন করতে হবে বলে সুকৌশলে মেম্বার ছানা উল্লাহ (ছানা) তার কাছ থেকে কাডির্ট নিয়ে নেন। এরপর থেকে মেম্বার কাডির্ট না দিয়ে সময় ক্ষেপণ করেন। আরও জানা গেছে, ওই ইউনিয়নের প্রায় দুই শতাধিক প্রতিবন্ধী, বিধবা, অসহায় ও দরিদ্রদের বিভিন্ন কাডর্ করে দেয়ার নাম করে গত দুই বছরে মেম্বার ছানা উল্লাহ প্রায় আটলাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। দীঘা গ্রামের অছিরত মÐলের ছেলে ভুক্তভোগী মিলন বলেন, ভিজিডির কাডর্ করে দেয়ার নাম করে গত দুই বছর আগে তার কাছ থেকে চার হাজার টাকা নিয়েছেন ওই মেম্বার। টাকা নেয়ার পর থেকে কোনো কাডর্ করে দেয়নি। এমনকি টাকাও ফেরত দেয়নি। টাকা চাইলে বিভিন্ন টালবাহনা করেন। টাকা চাইতে গেলে মেম্বার হুমকিও দিয়েছেন। একই গ্রামের প্রতিবন্ধী রেখা (৩৫) এর কাছ থেকে এক বছর আগে ছয় হাজার টাকা, রেজাউল করিমের ভিজিডির কাডের্র নামে চার হাজার টাকা, গোলাম হোসেনের বয়স্ক ভাতার নামে ৩ হাজার টাকাসহ প্রায় দুই শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে ওই ইউপি মেম্বারের বিরুদ্ধে। কিন্তু এখন পযর্ন্ত কোনো কাডর্ করে দেয়া হয়নি। অভিযোগকারী ভুক্তভোগী বিধবা সম্পা বানু বলেন, সবের্শষ গত ০২/০৭/১৮ ইং তারিখে কাডির্ট ফেরত চাইলে মেম্বার কাডর্ দিতে অস্বীকার করেন। এ ছাড়া অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন এবং বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদশর্ন করেন। মেম্বার কাডর্ নেয়ার পর থেকে আমি হিসাব নম্বর থেকে কোনো টাকা উত্তোলন করতে না পারায় নাবালক দুই সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, মেম্বার ছানা উল্লাহ আমার টিপসহি নকল করে ব্যাংকের হিসাব নম্বর থেকে নিয়মিত টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি। অভিযুক্ত মেম্বার ছানা উল্লাহর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিউজটি না করার জন্য অনুরোধ করেছেন এবং পরে সাক্ষাতে কথা বলতে বলেন। উপজেলা সমাজসেবা কমর্কতার্ মাহবুবল আলম বলেন, ইউএনও স্যার বিষয়টি দেখছেন। নওগঁা সদর উপজেলা নিবার্হী কমর্কতার্ (ইউএনও) মুসতানজিদা পারভিন বলেন, এ সম্পকের্ একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এর প্রেক্ষিতে ওই মেম্বারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি তার দোষ স্বীকার করেছেন। এ ছাড়া ওই কাডর্ধারীর হিসাব নম্বর থেকে আর কেউ যেন টাকা উত্তোলন করতে না পারে এজন্য উপজেলা সমাজসেবা কমর্কতাের্ক নিদের্শ দেয়া হয়েছে।