সরাইলে পানি সংকটে সেচ ব্যাহত

প্রকাশ | ২২ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
সরাইলে পলি মাটিতে ভরাট হয়ে যাওয়া মরা নদী -যাযাদি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের 'মরা নদী' হিসেবে পরিচিত মেঘনা নদীর শাখা নদী পলি পড়ে ভরাট হওয়ার পথে। ফলে চলতি বোরে মৌসুমে ধান চাষ করতে গিয়ে ১০ গ্রামের কয়েক হাজার কৃষক সেচের অভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, মেঘনায় জোয়ার এলেই কেবল মরা নদীতে সামান্য পানি প্রবেশ করে। ওই সময়ে মরা নদীর সেচ পাম্পগুলো কয়েকদিনের জন্য সচল হয়। এদিকে পানি সংকটের কারণে চলতি বোরো মৌসুমে ওই এলাকার কয়েক হাজার একর জমি অনাবাদি থেকে গেছে। অপরদিকে মরা নদীতে মাছ ধরার ওপর যাদের জীবনধারণ নির্ভরশীল এমন কয়েকশ পরিবার নদী শুকিয়ে যাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। মরা নদী শুকিয়ে যাওয়ায় হাওরাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামের কৃষিপণ্যসহ তাদের নিত্যদিনের পণ্যসামগ্রী পরিবহনেও পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ। উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের মরা নদীর তীরবর্তী রাজাপুর গ্রামের কৃষক সাদেক মিয়া, সোনা মিয়া, আবদুল হামিদ, আবু তাহের, আঙ্গুর মিয়া বলেন, আমাদের দুর্ভোগের কথা কথা কেউ বোঝে না। ভোটের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা আমাদের কাছে আসেন। ভোটের পর আর কেউ আমাদের খোঁজ নেয় না। তারা বলেন, পলি পড়ে মরা নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় আমাদের কষ্টের শেষ নেই। মরা নদী খনন করা হলে আমরা অল্প খরচে জমিতে সেচ দিতে পারতাম, ফলনও ভালো হতো। সরেজমিন দেখা গেছে, নদীতে পানি না থাকায় অনেক সেচপাম্প শুকনায় পড়ে আছে। জেলেদের মাছ ধরার নৌকাগুলোও শুকনায়। ওই নদীর পানিতে চালিত একটি সেচ প্রকল্পের সেচপাম্পের মালিক বাবু মিয়া জানান, নদীর মুখ ভরাট হয়ে পড়ায় নদীতে স্বাভাবিক পানি থাকে না। ফলে জোয়ারের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়, কখন জোয়ার আসে। এক সপ্তাহ জোয়ার থাকলে আবার দশ দিন বসে থাকতে হয়। ফলে সেচ প্রকল্পের সব জমিতে সময়মতো সমানভাবে সেচ দেয়া সম্ভব হয় না। এ ব্যাপারে অরুয়াইল ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কাজী মো. তারিফুর রহমান নদীটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় সেচ সুবিধা বিঘ্নিত হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, প্রায় প্রতিদিনই অনেক কৃষক নদী শুকিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে আমার সাথে যোগাযোগ করেন। বিষয়টি ঊর্র্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে অরুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেনে বলেন, নদীটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় এলাকার কৃষকদের খুবই কষ্ট হচ্ছে। কৃষকদের কষ্ট ও কৃষি উৎপাদনের কথা বিবেচনা করে মরা নদী, ছেতরা নদীসহ আরেকটি খাল খননের জন্য একাধিকবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহীনুজ্জামান জানান, তিনি কয়েক মাস আগে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে নকশাসহ প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানোর জন্য বললেও কোনো প্রস্তাব এখনো আসেনি।