সখীপুরের ভাতাভোগীরা প্রতারণার শিকার

প্রকাশ | ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী কার্ডের ভাতার টাকা। নগদ, বিকাশ কিংবা সমাজসেবা অফিসের কর্মকর্তা পরিচয়ে ফোন। কৌশলে জেনে নিচ্ছে পিন নম্বর। এরপরই টাকা উধাও। ইত্যেমধ্যে তিন শতাধিক কার্ডধারী ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন বলে জানিয়েছে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়। কার্ডধারী একাধিক ভুক্তভোগীর পরিবার জানিয়েছে, নিজেকে সমাজসেবা অফিসের লোক পরিচয় দিয়ে এবং ভাতার টাকা দ্বিগুণ করার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের হিসাব নম্বরের গোপন পাসওয়ার্ড নিয়ে নেয় হ্যাকাররা। সমাজসেবা অফিস সূত্রে জানা যায়, ভাতা জমা হওয়ার কয়েকদিন আগে থেকে কার্ডধারীর মোবাইল ফোনে এক ধরনের ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) নম্বর পাঠায় হ্যাকাররা। এই পিন নম্বর চাওয়ার কথা বলে হিসাব নম্বরের পাসওয়ার্ড চায়। প্রথমেই হ্যাকাররা সমাজসেবা অফিসের পরিচয় দেয় তারপর ভাতার টাকা বেশি পাইয়ে দিবে বলে প্রলোভন দেখায়। পাসওয়ার্ড না দিলে ভাতা বন্ধ করে দেওয়ার ভয় দেখায় বলে একাধিক কার্ডধারীর অভিযোগ। অসচেতনতার কারণেই সহজ-সরল মানুষ হ্যাকারের খপ্পরে পড়ছে। পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের শারিয়াত নামে এক প্রতিবন্ধী অভিভাবক বলেন, এক লোক ফোন করে বলল আপনার নম্বরে একটি পিন নম্বর গেছে, নম্বরটি বলেন। না বললে আগামী মাসে কোনো টাকা জমা হবে না। ভয় পেয়ে পিন নম্বরের স্থলে পাসওয়ার্ড বলে দিছি, তারপর দেখি মোবাইলে জমা পাঁচ হাজার টাকার কোনো হদিস নাই। সেই নম্বরে ফোন দিলাম কিন্তু এখন পর্যন্ত ওই নম্বর বন্ধ। পৌরসভার রামখা এলাকার বয়স্ক ভাতার কার্ডধারী ইলিমজান ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, 'এক টাউট উপজেলা অফিসের পরিচয় দিয়ে বলল, আপনার ভাতা কার্ডে সমস্যা হয়েছে। তাই মোবাইলের পিন নম্বর অথবা পাসওয়ার্ড দিন। পাসওয়ার্ড দেওয়ার পর পরই দেখি আমার মোবাইলে বয়স্ক ভাতার ১৮শ' টাকা নেই। কাউন্সিলর পারুল আক্তার বলেন, হিসেব খোলা মোবাইল নম্বর হ্যাক করে ভাতার টাকা নেওয়া একটি চক্র সখীপুরের অনেক মানুষের ক্ষতি করছে। এক সপ্তাহের মধ্যে পৌরসভার ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ৪১টি ভাতা কার্ডের মোবাইল নম্বর পরিবর্তনের আবেদন নিয়ে আসছি। অন্যদের সচেতন করে দিচ্ছি। তারপরও মানুষ হ্যাকারের খপ্পরে পড়েই যাচ্ছে। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মনসুর আহমেদ বলেন, সঠিক সময়ে ভাতাভোগীদের মোবাইলে টাকা পৌঁছে যাচ্ছে। বিষয়টি চমৎকার। তবে প্রতারকদের দৌরাত্ম্য আমাদের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। সমাজসেবা কার্যলয় প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। ইতোমধ্যে মোবাইল হ্যাক করে ভাতার টাকা নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানদের দায়িত্বে প্রত্যেক এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। উপজেলার প্রতি মাসের সমন্বয় সভায় সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারপরও অনেকে মোবাইলের পাসওয়ার্ড বলে দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সখীপুর ইউএনও মোহাম্মদ হোসেন পাটওয়ারী বলেন, ভোক্তভোগীদের দুই-একটি মেসেজ ইতোমধ্যে আমি পেয়েছি। ভাতাভোগীরা যেন পিন নম্বরগুলো কারও সঙ্গে শেয়ার না করে, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।