চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির নাজিরহাট-কাজিরহাট সড়কের পাশে ময়লার স্তূপ -যাযাদি
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির নাজিরহাট পৌরসভার কলেজ রোড সংলগ্ন তিন ওয়ার্ডে মন্দাগিনি খালের উত্তরে রাস্তার পাশ ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এসব ময়লার স্তূপ থেকে বের হওয়া উৎকট দুর্গন্ধ ও ধোঁয়ায় চরম বিপাকে পড়ছেন পথচারীসহ পৌরবাসী।
ফটিকছড়িতে নাজিরহাট-কাজিরহাট সড়ক সংলগ্ন স্থানে রাস্তার পাশের জায়গাটি এখন ময়লার স্তূপে পরিণত হয়েছে। এই রাস্তাটি অফিস, হাসপাতাল ও ছাত্রছাত্রীসহ প্রতিদিন সবশ্রেণির লোকজনের যাতায়াতের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এসব ময়লার স্তূপ থেকে বের হওয়া উৎকট দুর্গন্ধ ও ধোঁয়ায় চরম বিপাকে পড়ছেন পথচারীসহ পৌরবাসী।
নাজিরহাট পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলার স্থায়ী স্থান (ডাম্পিং স্টেশন) না থাকায় সড়কের পাশ ঘেঁষেই পৌরসভা ৩নং ওয়ার্ডের ইসলাম কোম্পানির ইট ভাটা (মন্দাখিনি খালের উত্তর পাশে) সংলগ্ন স্থানে সব ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। প্রায় ১১ বছর ধরে সড়কের পাশে ময়লা ফেলতে ফেলতে স্থানটি ময়লার স্তূপে পরিণত হয়েছে। এর দুর্গন্ধে পাশ দিয়ে চলাচল দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। ময়লা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পুরো এলাকা দূষিত করছে।
সরেজমিন নাজিরহাট-কাজিরহাট সড়কের নাজিরহাট পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, কেউ নাকে হাত দিয়ে, কেউবা মাস্ক পরে চলাচল করছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, অপরিকল্পিতভাবে দিনের পর দিন পৌরসভা থেকে এসব ময়লা-আবর্জনা ফেলায় দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। নাকে কাপড় কিংবা নিশ্বাস বন্ধ না করে এই রাস্তা দিয়ে যাওয়া একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া এখানে সব সময় ময়লায় উৎপন্ন মিথেন গ্যাসের আগুন জ্বলতে থাকে। সেখান থেকে প্রতিনিয়ত যে দুর্গন্ধ ও ধোঁয়া বের হচ্ছে তাতে দূষিত হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ।
পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোহাম্মদ আক্কাস ড্রাইভার বলেন, 'এখানে ময়লা ফেলায় পরিবেশ একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। কারও পক্ষে স্বাভাবিক নিশ্বাস নিয়ে এ রাস্তা পার হওয়া সম্ভব নয়। আমরা নাক বন্ধ করেই দ্রম্নত স্থান ত্যাগ করার চেষ্টা করি। আমরা বার বার অভিযোগ করেও কোনো সমাধান পাচ্ছি না।'
এ ব্যাপারে ময়লার স্তূপের পাশের বাড়ির মালিক মোহাম্মদ আলমগীর বলেন- '৩ বছর ধরে নাজিরহাট পৌরসভার এসব ময়লা ফেলা হচ্ছে। আমরা ওখানে থাকতে পারছি না। দুর্গন্ধ, ধোঁয়াতে বিভিন্ন পোকামাকড়, মাছি মশাতে ভরে গেছে। আমি নাজিরহাট পৌরসভা এবং উপজেলায় আবেদনও করেছি। কিন্তু এখনো কোন সমাধান পাইনি।'
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আরেফিন আজিম বলেন- এসব ময়লা থেকে বায়ুদূষণ হয়। কারন বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরিত হয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এ ছাড়া শ্বাসকষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। উন্মুক্তভাবে এভাবে ময়লা না ফেলে গর্ত করে এসব ময়লা পুড়িয়ে দেওয়া দরকার।
নাজিরহাট পৌরসভায় মেয়র লায়ন এ কে জাহেদ চৌধুরী বলেন- 'ময়লা ফেলার জন্য পৌরসভার নির্দিষ্ট কোনো জায়গা (ডাম্পিং স্টেশন) নেই। আমি দায়িত্ব গ্রহণ করার আগে থেকেই ওই স্থানে ১১ বছর ধরে ময়লা ফেলা হচ্ছে। তাই সরকারিভাবে কোনো বরাদ্দ নেই। আমরা একটা ফান্ডের মাধ্যমে ১০-১২ কিলোমিটার ভেতরে জায়গা নিতে চেষ্টা করছি।'