ঐতিহাসিক ৪ এপ্রিল আজ

মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গন বিভক্ত হয় ১১ সেক্টরে

প্রকাশ | ০৪ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

মাধবপুর (হবিগঞ্জ) সংবাদদাতা
আজ ঐতিহাসিক ৪ এপ্রিল। ১৯৭১ সালের এই দিনে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়া চা বাগানের বাংলোয় স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ঊর্ধ্বতন ২৭ সেনা কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এ বৈঠকেই দেশকে স্বাধীন করার শপথ নেয়া হয়। যুদ্ধের রণকৌশল প্রনয়নে রণাঙ্গণকে ১১টি সেক্টর ও ৩টি বিগ্রেডে ভাগ করা হয়। দিবসটি পালনে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও মাধবপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ব্যাপক প্রস্তত্মুতি গ্রহণ করেছে। এছাড়া হবিগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে প্রতি বছর এদিনে নানা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা দীর্ঘদিন ধরে বাংলোটিকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে আসলেও আজও এ দাবি পূরণ হয়নি। এছাড়া এ দিনটিকে জাতীয়ভাবে তেলিয়াপাড়া দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবিতে এবারও স্থানীয়ভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধবপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল মালেক মধু বলেন, আমরা আশা করি, স্বাধীনতার পক্ষের সরকার ঐতিহাসিক এ স্থানটিকে ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার ব্যবস্থা করবেন। আমরা প্রতি বৎসর ৪ এপ্রিল তেলিয়াপাড়া দিবস পালন করে থাকি। সেখানে জীবিত সকল সেক্টর কমান্ডারসহ বিপুল সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধার সমাবেশ ঘটে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত তেলিয়াপাড়া চা বাগান এলাকা বর্তমানে একটি আকর্ষণীয় পিকনিক স্পটে পরিণত হয়েছে। এটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক কিংবা তেলিয়াপাড়া রেলস্টেশন হতে প্রায় দুই কিলোমিটার অভ্যন্তরে ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা একটি স্থান। এই বাংলোর পাশে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি ধারণ করে সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে বুলেট আকৃতির একটি স্মৃতিসৌধ। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাংলোর যে ভবনটিতে সেনানায়ক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের বৈঠক হতো ভবনটি আজও সেই স্মৃতি ধারণ করে আছে। জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২১ জুনের পর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রচন্ড আক্রমণের কারণে তেলিয়াপাড়া চা বাগানে স্থাপিত সেক্টর হেড কোয়ার্টার সাময়িকভাবে সরিয়ে নেয়া হয়। প্রসঙ্গত, তেলিয়াপাড়ার এই সম্মেলনকে স্মৃতিময় করে রাখতে মেহেরপুর জেলার ঐতিহাসিক মুজিবনগরে স্থাপিত মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রে 'ঐতিহাসিক তেলিয়াপাড়া সম্মেলন' শিরোনামে একটি ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়। এতে ওই বৈঠকে উপস্থিত সকলের ভাস্কর্য স্থান পায়। তেলিয়াপাড়া চা বাগানের বাংলোয় ভ্রমণে আশা দর্শনার্থীরা স্মৃতিসৌধ এবং বাংলোটির কক্ষগুলো ঘুরে ঘুরে দেখে তৃপ্ত বোধ করেন। তারা স্মৃতিসৌধের পাশে বসে, বাংলোর সামনে দাঁড়িয়ে কিংবা ফুল বাগিচায় ছবি তুলতে কখনো ভুল করেন না। এদিকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এ স্থানটিকে দর্শনার্থীদের জন্য আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পাকা সড়ক ও রেস্ট হাউজ নির্মাণসহ সার্বিক পরিকল্পনা গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।