পুকুর ভরাট করে নির্মাণ হচ্ছে বিদ্যালয়ের ভবন

প্রকাশ | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

হাওড়াঞ্চল প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে স্কুল ভবন তৈরির করতে এভাবেই ভরাট করা হচ্ছে পুকুর -যাযাদি
পুকুর ও জলাশয় ভরাটের আইন লঙ্ঘন করে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে একটি পুকুর ভরাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এসব করা হয়েছে অষ্টগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি ৫ তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য। জানা গেছে, উপজেলার বড় বাজারে পার্শ্ববর্তী এই পুকুরটিতে কয়েক বছর আগেও মাছের চাষাবাদ করা হতো। বড় বাজারের পাশে হওয়ার কারণে বিভিন্ন সময়ে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল এই পুকুরটি। সম্প্রতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য গত কয়েক বছর ধরে পুকুরের মালিকদের কাছ থেকে এটি কিনেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই পুকুরটি ভরাট করে বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ করা হবে বলেও জানা গেছে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের উওর পাশে থাকা পুকুরটিতে পাইপ দিয়ে বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। পুকুরের ভরাটের কাজও প্রায় শেষের দিকে। তবে এ বিষয়ে কোনো খোঁজখবর জানে না স্থানীয় প্রশাসন। অন্যদিকে পরিবেশবাদিরা বলছেন, এমন চলতে থাকলে এক সময় হাওড়ে ইকো-সিস্টেম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. উবায়দুর রহমান সাহেল জানান, বিষয়টি অবগত ছিলেন না, তবে খোঁজখবর নিয়ে দেখবেন। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নাসিমা আক্তার বলেন, 'গত ৩ বছর আগে এটিকে পুকুর দেখেছিলাম। পরবর্তীতে ডোবায় পরিণত হয়। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কয়েক বছর ধরে এই পুকুরের প্রায় বিভিন্ন মালিক থেকে ১৫ শতাংশ জায়গা কিনে বালু ফেলে ভরাট করছে। ভরাট করা শেষ হলে বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের জন্য পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করা হবে।' তবে এভাবে পুকুর ভরাট করা যায় কি না এই প্রশ্নের সুস্পষ্ট উত্তর দিতে পারেননি প্রধান শিক্ষক। এদিকে হাওড়াঞ্চল ঢাকা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও পরিবেশবাদী রোটারিয়ান কামরুল হাসান বাবু বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন (২০১০ সালে সংশোধিত) ৬-এর ঙ ধারা অনুযায়ী, জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গা ভরাট বা অন্য কোনোভাবে শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। অথচ আইনের তোয়াক্কা না করে হাওড়ের সর্বত্র নির্বিচারে পুকুর ও জলাধার ভরাট চলছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে দৃশ্যমান সামান্য কোনো ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে দেখা যায় না। এমন চলতে থাকলে হাওড়ের ইকো-সিস্টেম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কিশোরগঞ্জের পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মো. রাখিবুল হাসান বলেন, বিষয়টি তার জানা ছিল না, তবে দেখবেন।