ফুলবাড়ীতে মাঠ কাঁপাচ্ছেন একঝাঁক সাবেক ছাত্রনেতা
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন
প্রকাশ | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে আসন্ন উপজেলা নির্বাচন হতে এখনো দুই মাস দেরি হলেও, শুরু হয়েছে ভোটের হাওয়া। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত চলছে ভোটের চুলচেরা বিশ্লেষণ।
আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠে নামা সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী ৪ জন ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন। সবাই এক সময়ের রাজপথ কাঁপানো তুখোড় সাবেক ছাত্রনেতা। আছেন সাবেক ভিপি-জিএস ও ভিপি জিএস পদে লড়াই করা ছাত্রনেতাসহ ছাত্র সংগঠনের সাবেক শীর্ষস্থানীয় নেতারা। এ কারণে সম্ভাব্য প্রার্থীদের স্কুল-কলেজের সহপাঠী বন্ধুরা দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে নিজ নিজ বন্ধুর নির্বাচনে সম্পৃক্ত হচ্ছেন ভোটের মাঠে। এতে ভোটের আলোচনা আরও জোরেশোরে শুরু হয়েছে।
এদিকে সাবেক ছাত্র নেতারা সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মাঠে নামায়, রাজনীতিতে নতুন সূচনার সম্ভাবনা দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ফুলবাড়ী সরকারী কলেজের ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মুশফিকুর রহমান বাবুল, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মোস্তাক আহম্মেদ চৌধুরী খোকন এবং উপজেলা ছাত্র মৈত্রীর সাবেক সভাপতি ও উপজেলা ওয়ার্কার্স পাটির সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিকদার।
এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাঠে নেমেছেন বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান উপজেলা ছাত্রমৈত্রীর সাবেক সভাপতি বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জু রায় চৌধুরী, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মাহবুব আলম মিলন, সাবেক ছাত্র নেতা বর্তমান পৌর যুবলের সদস্য সচিব মানিক মন্ডল, পৌর শহর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ হাছান মেহেদি রুবেল ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মকলেছার রহমান।
বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন ২০১৯ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করলেও এবার তিনি স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানান।
এদিকে দলের সমর্থন নিয়ে মাঠে নেমেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও এ আসনের টানা ৮ বারের নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এমপির ছোটভাই মুশফিকুর রহমান বাবুল। তিনি ২০১৫ সালের উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে সে সময় তিনি বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ খুরশিদ আলম মতির কাছে পরাজিত হন।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক ভিপি মোস্তাক আহম্মেদ চৌধুরী খোকন বলছেন, ২০১৯ সালের নির্বাচনে বিএনপির কোনো প্রার্থী নির্বাচন করেনি, এ কারণে আওয়ামী লীগ জয় পেয়েছিল। বিএনপি নির্বাচন করলে আওয়ামী লীগের জয়লাভ করার সুযোগ নাই, মানুষ আওয়ামী লীগের বিকল্প খুঁজছে। তবে তিনিসহ ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাঠে নামা উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মাহবুব আলম ও পৌর যুবদলের সদস্য সচিব মানিক মন্ডল বলছেন দল যদি বাধা দেয়, তাহলে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না।
এদিকে বড় দুই দলের বাইরে প্রগতিশীল মানুষকে খুঁজে পেতে তার দিকে জনগণ এগিয়ে আসবেন বলে মনে করছেন, ফুলবাড়ী রক্ষার আন্দোলনের নেতা ও সাবেক ছাত্র নেতা উপজেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিকদার। তিনি বলেন, ছাত্রনেতা থেকে আজ পর্যন্ত তিনি খেটেখাওয়া গণমানুষের অধিকারের জন্য রাজপথে লড়াই সংগ্রাম করছেন। এজন্য জনগণ তার পাশেই থাকবে।
এদিকে উপজেলা নির্বাচনে সসম্ভাব্য প্রার্থীরা সাবেক ছাত্র নেতা হওয়ায় রাজনীতিতে নতুন সূচনা সৃষ্টি হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। প্রগতিশীল রাজনৈতি নেতা ও ছাত্রমৈত্রীর সাবেক সভাপতি ডাক্তার ওয়াজেদুর রহমান বাবলু বলেন, উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে যেভাবে সাবেক ছাত্র নেতারা মাঠে নেমেছেন, একই ভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাঠে নামলে রাজনীতির একটি পরিবর্তন সৃষ্টি হবে।
বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ তেল-গ্যাস খনিজসম্পদ ও বিদু্যৎ বন্দর রক্ষা কমিটির ফুলবাড়ী শাখার আহ্বায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল বলেন, উপজেলা নির্বাচনে যারা মাঠে নেমেছেন, তারা সবাই সাবেক ছাত্র নেতা। তারা ছাত্র-রাজনীতি থেকে উঠে এসেছেন। এ রকম রাজনৈতিক নেতাদের হাতে স্থানীয় সরকারের নেতৃত্ব থাকলে জনগণ উপকৃত হবে।