বয়সের বাধা কাটিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় তিন নারী ইউপি সদস্য

প্রকাশ | ০১ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় চলমান এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন তিন জনপ্রতিনিধি। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া তিন জনের দুইজন উপজেলার পাকা ইউনিয়নের বর্তমান ও সাবেক সংরক্ষিত মহিলা সদস্য এবং অন্যজন বাগাতিপাড়া পৌরসভার সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর। তারা সবাই বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী। জানা গেছে, অল্প বয়সে বিয়ে হওয়ায় ও পারিবারিক অসচ্ছলতায় স্বাভাবিক পড়াশোনা থমকে যায় এই তিনজন প্রতিনিধির। সে সময় তীব্র ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে, জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার পর নানাভাবে উচ্চতর শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। তাই, দীর্ঘদিন পর স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের অনুপ্রেরণায় আবারও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তারা। বয়সকে তুচ্ছ করে ২০২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের নবম শ্রেণিতে। আর এবছর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলমান এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন এই তিন জনপ্রতিনিধি। উপজেলার পাকা ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ও ফুড প্রসেসিং অ্যান্ড প্রিজারভেশন ট্রেডের পরীক্ষার্থী শিলা খাতুন (৩০) জানান, অষ্টম শ্রেণি পাস করার পর বিয়ে হয়ে যাওয়ায় তার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে পড়াশোনার করার সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় স্বামীর উৎসাহে আবার লেখাপাড়া শুরু করেছেন তিনি। একই ইউনিয়নের সাবেক সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ও ড্রেস মেকিং এন্ড টেলারিং ট্রেডের পরীক্ষার্থী শাহানাজ পারভীন(৩২) বলেন, পরিবারের ছোট ভাই বোনদের পড়াশোনার কথা চিন্তা করে অল্প বয়সে বিয়ে দেয় পরিবার। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার তীব্র ইচ্ছা থেকেই দীর্ঘসময় পর তার কারিগরি শাখায় ভর্তি হওয়া। বাগাতিপাড়া পৌরসভার ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও ড্রেস মেকিং এন্ড টেলারিং ট্রেডের পরীক্ষার্থী মুর্শিদা বেগম (৪৩) জানান, প্রত্যেক জনপ্রতিনিধিরই শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন। সেই প্রয়োজনীয়তা থেকেই লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এ বিষয়ে বাগাতিপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পরিবারের পাশাপাশি জনসেবামূলক বিভিন্ন কাজে জনপ্রতিনিধিরা নিয়োজিত থাকেন। সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে লেখাপড়া চালিয়ে নেওয়ার যে উদ্যোগ তা প্রশংসার দাবিদার। বয়স যে লেখাপড়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা হতে পারে না এই তিন জনপ্রতিনিধিকে তার দৃষ্টান্ত।