রংপুরে ৪টি নদী পুনঃখনন শুরু

প্রকাশ | ১৪ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আবেদুল হাফিজ, রংপুর রংপুরের ছোট নদী খালগুলো দীর্ঘদিন ছিল অন্যের দখলে। এগুলো দখলমুক্ত করে আবারও প্রাণ ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। বাড়ানো হচ্ছে সৌন্দর্য। ইতিমধ্যে কয়েকটি নদী ও খাল পুনঃখনন শুরু হলেও নগরীর বুকে বয়ে যাওয়া শ্যামাসুন্দরী খালটি এখনও পুনঃখনন শুরু ও বেদখলবাজদের উচ্ছেদ হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, জেলায় ৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪১ কিলোমিটারের ৪টি ছোট নদী ও ৩টি খাল পুনঃখনন করা হচ্ছে। রংপুরের বিভিন্ন ছোট নদী ও খাল সরজমিনে দেখা গেছে, আগের প্রাণ ফিরিয়ে আনতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে পুনঃখনন কাজ হচ্ছে। এর সঙ্গে উদ্ধার করা হচ্ছে বেদখল হওয়া জমি। কোথাও কোথাও বেদখল হওয়া জমিগুলো উদ্ধারে বাধার সম্মুখিন হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে নদী ও খালগুলো খনন না হওয়ায় নদী ও খালগুলো মৃত অবস্থায় ছিল। এগুলোর তলদেশ দখল করে অনেকে চাষাবাদ করছেন। অন্যদিকে, পানি না থাকায় অসংখ্য স্থানে ময়লা স্তুপে পরিণত হয়েছে। কেউ কেউ পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য পাইপ লাইন সংযোগ দিয়েছে। অনেকে জানান, পানি শূন্য হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ বিলুপ্ত হয়েছে। তারা জানান, নদী ও খালগুলো আগের অবস্থায় ফিরে ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতা হবে না। মাছও পাওয়া যাবে। তারা পুনঃখননের জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তবে কেউ কেউ জানান, উঁচু জমিতে জলাবদ্ধতা দূরীকরণে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জমির সঙ্গে নদী ও খালগুলোর সংযোগ প্রয়োজন। তা না হলে অনেকে জমি থেকে পানি অপসারণে পাড়গুলো কেটে দিতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে আবারও নদী ও খালগুলো ভরাট হয়ে যাবে। তাতে আর্থিক ক্ষতি হবে সরকারের। এই কথাগুলো জানালেন, পীরগঞ্জ উপজেলার কুমেদপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের চৌকিদার আনছার আলী, মিঠাপুকুরের কাফ্রিখাল ইউনিয়নের মশিউর রহমানসহ অনেকে। এদিকে, নগরীর তাজহাট এলাকায় শ্যামাসুন্দরী খালের পুনঃখনের কাজ এখনও শুরু করতে পারেনি সরকারি জমি দখলদারদের বাধায়। ফলে কাজ বন্ধ রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, রংপুর বিভাগে ১ হাজার ১২৫ কিলোমিটার নদী, খাল ও জলাশয় পুনঃখনন কাজ চলছে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৭০৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে রংপুর জেলায় ১৪১ কিলোমিটারের ৪টি ছোট নদী ও ৩টি খাল রয়েছে। এগুলো হলো- গঙ্গাচড়া-কাউনিয়ায় মানস, পীরগাছায় বুড়াইল, পীরগঞ্জে আখিরা ও বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জে চিকলী নদী এবং রংপুর নগরীতে শ্যামাসুন্দরী, মিঠাপুকুরে কাফ্রিখাল ও পীরগাছায় হরিশ্বর খাল। প্রত্যেকটি নদী ও খাল গড়ে ২০ মিটার পর্যন্ত প্রশস্ত করা হয়েছে। এতে করে প্রতি কিলোমিটারে সাড়ে ৪ হাজার একর জমি উদ্ধার হবে। সৌন্দর্য বর্ধনে নদী ও খালে দুধারে সামাজিক বনায়ন করা হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান জানান, দীর্ঘদিন ধরে নদী ও খাল পুনঃখননের কাজ নকশা দেখে ও স্বচ্ছভাবে হচ্ছে। তিনি বলেন, পুনঃখনন কাজ শেষ হলে জলাবদ্ধতা দূর হবে ও রক্ষা পাবে প্রাকৃতিক ভারসাম্য।