গরম আর লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ রাজশাহীবাসী

প্রকাশ | ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

রাজশাহী অফিস
রাজশাহীর ওপর দিয়ে কয়েকদিন ধরে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। প্রচন্ড রোদ আর গরমে সাধারণ মানুষের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়েছে। তাপপ্রবাহ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজশাহী অঞ্চলে শুরু হয়েছে বিদু্যতের লোডশেডিং। এতে করে জনদুর্ভোগ বেড়ে গেছে আরো এক ধাপ। গরমের কারণে দুপুরের পর শহরের প্রধান সড়কগুলো ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। ক্লান্ত শরীরে গাছের ছায়ায় বসে থাকছেন শ্রমজীবী মানুষ। গ্রামেও দেখা মিলছে একই চিত্র। শীতের শেষ আর গরমের শুরুতেই বিদু্যতের এই যাওয়া-আসার খেলায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে জনসাধারণের মাঝে। গ্রামাঞ্চলে দিনের বেলা মাঝে মধ্যে বিদু্যৎ যাওয়া-আসা করলেও ইফতারির পর থেকে সেহরি খাওয়া পর্যন্ত ঘনঘন বিদু্যৎ যাওয়া-আসায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে জনগণ। তবে বিদু্যৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন লোডশেডিং সেভাবে নেই। বিদু্যতের মেইনটেনেন্সের কাজ চলমান থাকায় মাঝে মধ্যে লাইন টেনে কাজ করা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীর প্রায় সব উপজেলায়ই গরম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘন ঘন বিদু্যৎ যাওয়া-আসা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে মাগরিবের নামাজের পর বিদু্যৎ চলে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর বিদু্যৎ আসলেও তারাবির সময় পুনরায় বিদু্যৎ চলে যায়। এছাড়াও রাত ১১টার পর থেকে ফজরের আজানের আগে একাধিকবার লোডশেডিং হচ্ছে। প্রায় আধাঘণ্টা থেকে শুরু করে ১ ঘণ্টার সময়ও অধিক সময় বিদু্যৎ থাকছে না। এতে করে গরমে বাড়ির শিশু-বৃদ্ধরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বিদু্যৎ না থাকায় এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের লেখাপড়াও ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, তীব্র রোদ আর গরমে জমির পানি দ্রম্নত শুকিয়ে যাওয়ায় জমিতে পানির চাহিদা বেড়ে গেছে। কৃষকরা জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য ডিপ টিউবওয়েলগুলোতে ধর্না দিচ্ছেন। বিদু্যৎ সরবরাহ ঠিকমতো না থাকায় সময় মতো পানি না পেয়ে জমিতে পানি দিতে বিলম্ব হচ্ছে। এতে করে পানির অভাবে ধানের ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করছেন কৃষকরা। গোদাগাড়ীর কৃষক আবুল হোসেন জানান, বিদু্যৎ ঠিকমতো না থাকায় জমিতেও পানি পাওয়া যাচ্ছে না ফলে ধানের ক্ষতি হতে পারে। গরমের শুরুতেই যদি বিদু্যতের এমন ঘাটতি দেখা দেয় তাহলে পরবর্তীকালে আরো জমির ফসলের ক্ষতি হবে। গোদাগাড়ী নেসকো অফিস সূত্র জানায়, 'আমাদের উপজেলায় বিদু্যতের চাহিদা রয়েছে ১২ মেগাওয়াট কিন্তু শুক্রবার সরবরাহ পেয়েছি মাত্র সাড়ে ৭ মেগাওয়াট। দিনের বেলা বিদু্যৎ সরবরাহ ঠিকমতো পাওয়া গেলেও রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।' রাজশাহী নেসকো পিএলসি বিভাগীয় অফিসের প্রধান প্রকৌশলী (অপারেশন) মো. জাকির হোসেন বলেন, শুক্রবার রাজশাহী বিভাগের বিদু্যতের চাহিদা ছিল ৩৮৮ মেগাওয়াট, সরবরাহ পাওয়া গেছে ৩৭০। বৃহস্পতিবার রাতে চাহিদা ছিল ৩৭৫ মেগাওয়াট, পাওয়া গেছে ৩৭০ মেগাওয়াট এবং রাত ৯টায় ৪৫০ মেগাওয়াট চাহিদা ছিল সরবরাহ পাওয়া গেছে ৩৮০ মেগাওয়াট। বিদু্যতের চাহিদা আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করছে। বর্তমান সময়ে গরমের তীব্রতা থাকায় চাহিদা বেশি হচ্ছে তবে বৃষ্টি হয়ে গেলে এই চাহিদা কমে যাবে বলেও জানান তিনি। লোডশেডিংয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, বিদু্যতের মেইনটেনেন্সের কাজ চলমান থাকায় দিনের বেলাও লোডশেডিং হচ্ছে। তবে রাতের বেলা বিদু্যতের ব্যবহার বেড়ে যাওয়া ও জমিতে সেচপাম্পগুলো পুরোদমে চালানো হয় তাই বিদু্যতের ওপর চাপ পড়ে।