হরিপুর সীমান্তে মিলনমেলা

প্রকাশ | ১৬ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

হরিপুর (ঠাকুরগাঁও) সংবাদদাতা
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে কাঁটাতারের বেড়া উপেক্ষা করে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বিভিন্ন সীমান্তে দুই বাংলার মানুষের মধ্যে মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয় -যাযাদি
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে কাঁটাতারের বেড়া উপেক্ষা করে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বিভিন্ন সীমান্তে দুই বাংলার মানুষের মধ্যে মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার বাংলাদেশের হরিপুর কাড়িগাঁও বিওপি, কান্ধাল, মলানী, ডাবরী, বেতনা, বুজরুক এবং ভারতের মালদখন্ড, বসতপুর, শ্রীপুর, নারগঁও, কাতারগঞ্জ ও বোররা সীমান্তের ৩৫৫ ও ৩৫৬ নং পিলার থেকে শুরু করে ৩৭২ নং পিলার এলাকা পর্যন্ত ১০টি পয়ন্টে দুই বাংলার লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতিতে এ মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতি বছর এ দিনকে সামনে রেখে দুই দেশের স্বজনরা ভিড় জমায় সীমান্ত এলাকায়। পরস্পরের মধ্যে দেখা সাক্ষাৎ ও কথা-বার্তা না হওয়া পর্যন্ত কাঁটাতারের দুই পাশে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন তারা। রোববার সকালে গিয়ে কাঁটাতারের দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় দুই দেশের লাখো মানুষকে। গেট না খুললেও স্বজনদের ধরে রাখতে পারেন নি দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। এদের মধ্যে গাইবান্দার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা নাসিমা বেগম (৪০) দেখা করতে আসেন তার মামা নাসির আলীর সঙ্গে এবং ঠাকুরগাঁও সদরের গরেয়ার গ্রামের শ্রী গজেন চন্দ্র রায় (৭০) দেখা করতে আসেন তার মেয়ে গীতা রানীর সঙ্গে। ১০ বছর পর মেয়েকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন গজেন চন্দ্র রায়। এ সময় বাবাকে দেখেও কেঁদে ফেলেন গীতা রানী। গজেন চন্দ্র জানান, ১০ বছর আগে গীতা রানীর বিয়ে হয় ভারতের মাল্‌দা জেলার রতুয়া থানার চাঁনমনি গ্রামে। বিয়ের পর এই প্রথম মেয়ের সঙ্গে দেখা হলো তার। পরে মেয়ে ও জামাইয়ের হাতে নতুন কাপড় এবং মিষ্টি তুলে দিয়ে বেশ আনন্দিত হন তিনি। এছাড়া জয়পুর হাটের পুর্ণিমা রানী জানান, ৭ বছর আগে ছোট বোন শ্রীমতি রানীর বিয়ে হয় ভারতের গোয়ালপুকুর থানার পাঁচঘরিয়া গ্রামে। বিয়ের পর এই প্রথম বোনের সঙ্গে দেখা। কথা বলার পর বোনকে কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে মিষ্টি ও শাড়ী দিতে পেরে আনন্দিত তিনি। এভাবে কাঁটাতারের দুই পাশে দাঁড়িয়ে অনেকেই তাদের আত্নীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ এবং কথা-বার্তা বলেন এবং প্রয়োজনীয় জিনিষ-পত্র আদান-প্রদান করেন। তবে, দু'দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের মৌখিক অনুমতির প্রেক্ষিতে বিজিবি ও বিএসএফ-এর কঠোর নিরাপত্তা ও উপজেলা প্রশাসনের বিশেষ নজরদারির মধ্যে প্রতিবছর মেলাটি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়।