বৃষ্টির জন্য এস্তেস্কার নামাজ আদায়

প্রকাশ | ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
পাবনা শহরের দারুল আমান ট্রাস্টের ক্যাম্পাসে ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন মুসলস্নীরা -যাযাদি
গ্রীষ্মের দাবদাহ ও খরায় পুড়ছে সারাদেশ। প্রচন্ড রোদ ও তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। বৃষ্টি না হওয়ায় নদী-নালা, খাল-বিল প্রায় শুকিয়ে গেছে। পানির অভাবে ফসলের ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে পড়েছে। পানির জন্য সর্বত্র হাহাকার অবস্থা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে দুই রাকাত 'ইসতিসকা' নামাজ আদায় করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত খবর- কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁছগাছী ইউনিয়ন বাজার ঈদগাহ মাঠে বুধবার সকাল ৯টায় কয়েক শত ধর্মপ্রাণ মুসলমান এ নামাজে ও দোয়ায় অংশগ্রহণ করে। বিশেষ নামাজ শেষে মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা ফয়েজ উদ্দিন। এছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় এ বিশেষ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই অসহনীয় পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে মুসলিস্নরা মোনাজাতে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। মুসলিস্নরা মোনাজাতের সময় পরনের পাঞ্জাবি ও টুপি উল্টো করে পরিধান করেন। পাঁচগাছী এলাকার বাবুল মিয়া (৫০) বলেন, 'আমার জীবনে আমি এমন গরম দেখি নাই। এই তীব্র গরম থেকে বাঁচতে আজ বিশেষ নামাজ আদায় করলাম। আলস্নাহ পাক যেন বৃষ্টি বর্ষণ করেন, যাতে পরিবেশটা ঠান্ডা হয়।' মোনাজাত পরিচালনাকারী মাওলানা ফয়েজ উদ্দিন বলেন, 'তীব্র দাবদাহের কারণে বর্তমানে আমাদের যে অবস্থা এবং পরিবেশের ওপর এর যে প্রভাব পড়েছে, এর কারণেই সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর থেকে পরিত্রাণের জন্য আমরা এ বিশেষ 'ইসতিসকা' নামাজ আদায় করলাম।' পাবনা প্রতিনিধি জানান, পাবনা জেলা শহরের টার্মিনাল এলাকার দারুল আমান ট্রাস্টের ক্যাম্পাসে খোলা আকাশের নিচে বুধবার সকাল সোয়া ৯টায় ইসতিসকার নামাজ ও দোয়া করেছেন মুসলমানরা। নামাজ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন পাবনা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক এবং মসজিদে আত তাকওয়ার পেশ ইমাম মাওলানা আব্দুস শাকুর। এতে ছাত্র, যুবকসহ শহরের শত শত ধর্মপ্রাণ মুসলমান অংশগ্রহণ করেন। তাওবাতুন নাসুহা বা একনিষ্ঠ তাওবার মাধ্যমে আলস্নাহর কাছে রহমতের বৃষ্টি কামনা করে ২ রাকাত নফল নামাজ আদায় করা হয়। মোনাজাতে মুসলিস্নরা অঝোরে চোখের পানি ছেড়ে তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করেন। নামাজের আগে সংক্ষিপ্ত বয়ানে আব্দুস শাকুর বলেন, 'পৃথিবীর মাটি যখন শুকিয়ে যায় বা অনাবৃষ্টি, খরা দেখা দেয়, কূপ ও ঝরনার পানি কমে যায়, নদী শুকিয়ে যায় তখন ইসতিসকার নামাজ আদায় করা হয়। খোলা মাঠে জামাতের সঙ্গে আদায় করতে হয়। এই নামাজে কোনো আজান বা ইকামত নেই। সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি জানান, ফরিদপুরের সালথায় সালাতুল ইসতিসকার বিশেষ নামাজ আদায় করেছেন মুসলিস্নরা। বুধবার সকাল ১১টায় উপজেলা মডেল মসজিদ সংলগ্ন মাঠের মধ্যে এ নামাজ আদায় করা হয়। নামাজে উপজেলার দুই শতাধিক ধর্মপ্রাণ মুসলমান অংশগ্রহণ করেন। বিশেষ এই নামাজ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন উপজেলা মডেল মসজিদের ইমাম মুফতি রবিউল ইসলাম। এ বিষয়ে তিনি বলেন, 'খরা বা দাবদাহের অবস্থা থেকে নিষ্কৃতি পেতে আলস্নাহতা'আলার কাছে তওবা করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে আকুতি ভরে বৃষ্টির জন্য দোয়া করতে হয়। এই নামাজকে ইসতিসকার নামাজ বলে।' মাধবদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি জানান, নরসিংদীর মাধবদীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে ইসতিসকার নামাজ আদায় করা হয়েছে। বুধবার সকাল ১১টায় মাধবদী এসপি স্কুলের মাঠে ইসতিসকার নামাজের আয়োজন করা হয়। নামাজে ইমামতি করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মাধবদী শহর শাখার আমির মাওলানা মো. আমিনুল ইসলাম। মাধবদী শহর শাখার সেক্রেটারি মোয়াজ্জেম হোসেনসহ জামায়াতে ইসলামীর মাধবদী থানা শাখা, মাধবদী শহর শাখাসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী ও দল-মত-নির্বিশেষে মুসলিস্নরা সালাতে অংশগ্রহণ করেন।