খোলা আকাশের নিচে পাঠদান

প্রকাশ | ২৩ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

পাবনা প্রতিনিধি
পাবনা চাটমোহরে সোন্দভা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এভাবেই খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদান -যাযাদি
পাবনার চাটমোহর উপজেলার ৫০ নং সোন্দভা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতিতেই গেল শনিবার ভবনে ছাদের বিমের অংশ ভেঙে পড়েছে। স্কুলটির শ্রেণিকক্ষ সংকটে এবং ভবনের দুটি শ্রেণিকক্ষ পরিত্যক্ত হয়ে পড়ায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা স্কুলের মাঠে খোলা আকাশের নিচেই ক্লাস করছে। পাশাপাশি স্কুলটির ভবন, শ্রেণিকক্ষ এবং নানা সমস্যার কারণে সৃষ্ট ভোগান্তিতে পড়েছেন স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। আর পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস ও শিক্ষকদের অফিস ওই ভবনেই ঝুঁকির মধ্যে করতে হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হরিপুর ইউনিয়নের সোন্দভা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান ভবনের একটি শ্রেণিকক্ষের ছাদের বিমের একটি অংশ ভেঙে পড়ে। অন্য কক্ষগুলোতেও ফাটল ধরেছে। প্রধান শিক্ষিকাসহ সহকারী শিক্ষিকাদের বসার কক্ষও একই ভবনে। সেটাতেও একই অবস্থা। ঝুঁকির মধ্যেই ওই কক্ষে অবস্থান করতে হচ্ছে শিক্ষকবৃন্দকে। শিক্ষকদের সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, ক্লাস সংকুলান না হওয়ায় পরিত্যক্ত শ্রেণিকক্ষ থেকে সিট ও হাই বেঞ্চ বের করে এনে স্কুলের মাঠে গাছের নিচে বসিয়ে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়া হচ্ছে। প্রচন্ড গরম, রোদবৃষ্টি ও ঝড়ের মধ্যেই অবস্থার প্রেক্ষিতে ক্লাসগুলো নেয়া হচ্ছে। স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে তারা জানান, ১৯৪৫ সালে বড়াল নদীর পাড়েই এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। স্বাধীনতার পর স্কুলটি সরকারীকরণ হয়। ২২৭ জন শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে ৬ জন শিক্ষক। নেই পর্যাপ্ত সুপেয় পানির ব্যবস্থা। নেই কোনো সীমানা প্রাচীর। বড়াল নদীর পাড় ঘেঁষে স্কুলটির অবস্থান হওয়ায় যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এমনটি দাবি করলেন স্কুল সংশ্লিষ্টরাও। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শর্মিলা খোন্দকার বলেন, স্কুলের ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বাধ্য হয়েই যে কোনো ধরনের প্রাণহানির আশঙ্কায় শিক্ষার্থীদের গাছতলাতে ক্লাস নেয়া হচ্ছে। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই ক্লাস নেয়া হচ্ছে। আর আমরা শিক্ষকরাও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই অবস্থান করছি। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, সরেজমিনে পরিদর্শন করে নানা সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে। তন্মধ্যে ভবনটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রম্নতই নতুন ভবনের বরাদ্দ আসবে।